প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা

আজ আমরা আলোচনা করব প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা সম্পর্কে । আপনি যদি প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনার কাজে লাগবে অথবা আপনি পড়তে পারেন । প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতার বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয় জিনিস রয়েছে যেমন- বয়স, যোগ্যতা, পদের নাম, ব্যাংকের নাম ইত্যাদি । আজকের আর্টিকেলে আমরা এইসব বিষয়গুলো নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। 

যদি প্রাইভেট ব্যাংকে (Private Bank) চাকরি আপনার স্বপ্ন হয়ে থাকে, তবে এই লেখাগুলো আপনার জন্য। এখান থেকে আপনি জানতে পারবেন প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা এর জন্য কি কি প্রয়োজন হয়। 

প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা

প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিষয়টি নির্ভর করে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের উপর। সাধারণত, ব্যাঙ্কিং ক্যারিয়ারে জন্য অনেক গুণাবলী এবং দক্ষতা থাকা প্রয়োজন । একটি প্রাইভেট ব্যাংকে অনেকগুলো পদ থাকে, যে পদগুলোর বিপরীতে যে প্রার্থী চাওয়া হয় সেগুলো সম্পূর্ণ সেই পদটির দায়িত্ব কি রকম সেটার ওপর নির্ভর করে থাকে। এখন আমরা কয়েকটি প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব ।

পদের নামব্যাংকের নাম    যোগ্যতা  বয়স
ম্যানেজার/সাব-           ম্যানেজার  যমুনা ব্যাংকস্নাতকোত্তর পাস    –
অফিসার-ট্রেড     সার্ভিসেস  আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক    স্নাতক২৫ থেকে ৩৫
  অ্যাসিস্ট্যান্ট          রিলেশনশিপ    অফিসার
  ব্যাংক এশিয়া
        স্নাতক        –
ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনিমিউচুয়াল ট্রাস্ট       ব্যাংক  স্নাতক অথবা     স্নাতকোত্তর      –

উপরের ছকটিতে আমরা দেশের সেরা কয়েকটি প্রাইভেট ব্যাংকের চাকরির সার্কুলার উপস্থাপন করেছি, যেটি দেখে আপনি কিছুটা ধারণা করতে পেরেছেন যে, প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির জন্য কি রকম যোগ্যতা প্রয়োজন। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় হলো আপনাদের শুধু অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেটের যোগ্যতা থাকলেই হবে না।

বর্তমান সময়ে প্রাইভেট ব্যাংকগুলোতে চাকরির বাজার এতটাই প্রতিযোগিতা পূর্ণ হয়ে গেছে যে কর্মকর্তারা আপনাকে নিয়োগ দেওয়ার আগে আপনার বিষয় গত জ্ঞান কতটুকু রয়েছে সেটা বিবেচনা করবে। অতএব নিজেকে এমন ভাবে প্রস্তুত করতে হবে যেন প্রাইভেট ব্যাংক সম্পর্কিত যেকোনো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেন। 

Read More  চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম - প্রফেশনাল সিভি তৈরির নিয়ম

প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির প্রস্তুতি

প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির প্রস্তুতি

একটি প্রাইভেট ব্যাংকে একজন প্রার্থী নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রাইভেট ব্যাংক কর্তৃক তিনটি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়, তাহল এমসিকিউ, লিখিত এবং ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষা।

প্রাইভেট ব্যাংকের চাকরির প্রস্তুতির ক্ষেত্রে, সাধারণত বিসিএস পরীক্ষায় যে প্রশ্নগুলো আসে সেই ধরনের প্রশ্ন, ব্যাংক বইগুলো পড়লে প্রস্তুতি অনেক সহজ হয়ে যায়। প্রাইভেট ব্যাংকের চাকরির প্রস্তুতির ক্ষেত্রে,মৌখিক পরীক্ষাগুলোতে সাধারণত সমসাময়িক প্রশ্ন করা হয় খুঁটিনাটি বিষয়ে। তাছাড়া ও ব্যাংকিং সেক্টর এবং বর্তমান অর্থনীতির সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। তাই প্রাইভেট ব্যাংকের চাকরির প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আমাদের এই বিষয়গুলো খুব ভালো করে প্রস্তুতি নিতে হবে ।

প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির বেতন কত

বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকারদের সর্বনিম্ন বেতন বেঁধে দিয়ে সার্কুলার জারি করেছে! জারিকৃত সার্কুলারে বলা হয়েছে, বেসরকারি ব্যাংকের এন্ট্রি লেভেলে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের শিক্ষানবিশকালে ন্যূনতম বেতন- ভাতা হবে ২৮ হাজার টাকা!  ব্যাঙ্কিং ক্যারিয়ার কে বলা হয় বর্তমান সময়ের সেরা জব ! আবার বলা হয়েছে যে, লক্ষ্য অর্জন না করতে পারলে বা অদক্ষতার অজুহাতে কোন ব্যাংকারকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া যাবে না। শিক্ষানবিসকাল হলে একজন কর্মকর্তার প্রারম্ভিক মূল বেতন সহ ন্যূনতম মোট বেতন হবে ৩৯ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলারে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে! অফিস সহকারীদের সর্বনিম্ন ২৪ হাজার টাকা বেতন হতে হবে। অদক্ষতা বা লক্ষ্যপূরণ না করার অজুহাতে কাউকে ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না। 

প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির সুবিধা

প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির সুবিধা

প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির সুযোগ সুবিধা অনেক। তার মধ্যে প্রথমত, ভালো কর্মসংস্থান পরিবেশ, দ্বিতীয়ত- প্রাইভেট ব্যাংকে বেতন- ভাতাদি ভালো পরিসরে দেয়া হয়। এছাড়াও রয়েছে বিশেষ প্রফিটেবল সুযোগ সুবিধা। আরো রয়েছে পদোন্নতি করার সুবিধা।

আজকের লেখাটি আপনাদের জন্য প্রাইভেট ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা নিয়ে! আপনি যদি প্রাইভেট ব্যাংকে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে চান! তাহলে সম্পূর্ণ লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আশা করি উপকৃত হবেন। বাংলাদেশের প্রাইভেট ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা গুলো মোটেও তুচ্ছ করা উচিত নয়!

Read More  কি কি সমস্যা থাকলে বিজিবি চাকরি হয় না

প্রাইভেট ব্যাংকে নিজের প্রয়োজনে যেকোনো সময় ছুটি নেওয়া যায়। আপনার চিকিৎসার জন্য নিজস্ব ওয়েলফেয়ার ফাউন্ড রাখে প্রাইভেট ব্যাংক! এছাড়াও রয়েছে প্রাইভেট ব্যাংকে নিজস্ব প্রভিডেন্ট ফান্ড। থেকে আপনি আপনার প্রয়োজন মত লোন সুবিধা নিতে পারবেন ।বর্তমানে প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির নিরাপত্তার দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। 

১. ভালো কর্ম-পরিবেশ

প্রাইভেট ব্যাংকে সুবিধা অনেকটাই সরকারি ব্যাংকে সুবিধা মত! প্রাইভেট ব্যাংকে কর্মচারীদের কে একটি প্রফেশনাল এবং সুন্দর কাজের পরিবেশ দিয়ে থাকে। এরকম সুন্দর কাজের পরিবেশ যে কোন কর্মচারীর ভালো লাগবে। প্রাইভেট ব্যাংক একটি সামগ্রিক লক্ষ্য নিয়ে এগোতে থাকে। প্রত্যেকটি ব্যাংকার তাদের নিজস্ব লক্ষ্য পূরণের দায়বদ্ধ। নিজস্ব কর্মস্থানে থেকে প্রত্যেক ব্যাংকারকে তার দক্ষতা পরিচয় দিতে হয়। প্রাইভেট ব্যাংকের কর্মসংস্থান পরিবেশটা থাকে অনেক বেশি গোছানো, সুন্দর এবং প্রফেশনা!

২. লোন নেয়ার ভালো সুবিধা

প্রাইভেট ব্যাংকে আপনি পাবেন প্রতি বছর শেষে ১০ ভাগ ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধি! এছাড়াও চার্জ ফি, ক্রেডিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা! প্রাইভেট ব্যাংকে কোন রকম চার্জ ছাড়াই ক্রেডিট কার্ড এবং ডেবিট কার্ড আপনি ব্যবহার করতে পারবেন! এরকম ভাবে কোনোরকম সুদ ছাড়াই লোন নেওয়ার সুবিধা রয়েছে। 

প্রাইভেট ব্যাংকের লাভজনক সুবিধার মধ্যে প্রধান সুবিধা হল- যে কোন ক্ষেত্রে যেমন বাড়ি, গাড়ি ক্রয় করা এবং তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনি কম সুদে লোন নিতে পারবেন! এবং এর জন্য বিশেষ কোনো মানসিক চাপ নিতে হবে না।

৩.ভালো স্যালারি ও ভাতার সুবিধা 

আমরা জানি, সরকারি ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে চাকরির গ্রেড অনুযায়ী বেতন দেয়া হয়। কিন্তু প্রাইভেট ব্যাংকে নিয়োগ পদের উপর ভিত্তি করে বেতন দেয়া হয়! প্রাইভেট ব্যাংকে অনেকগুলো নিয়োগ পদ রয়েছে! এর মধ্যে রয়েছে জুনিয়র অফিসার, তাছাড়া রয়েছে প্রবেশনারি অফিসার এবং ম্যানেজমেন্ট ট্রাইনি অফিসার। এদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব বেতন- ভাতা দি রয়েছে।

প্রাইভেট ব্যাংকে বিশেষ বেতন-ভাতাদি পাওয়ার সুবিধা রয়েছে।

ম্যানেজমেন্ট ট্রাইনি অফিসার

ম্যানেজমেন্ট ট্রাইনি অফিসারের সর্বনিম্ন বেতন ৪৫ হাজার থেকে ৬৫ হাজার টাকা পর্যন্ত!ম্যানেজমেন্ট ট্রাইনি অফিসার লক্ষ্য পূরণ করতে পারলে ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ হাজার টাকা বেতন বেড়ে যায়!

Read More  ক্যারিয়ার গঠনে গুণ ও দক্ষতা

প্রবেশনারি অফিসার

প্রবেশনারি অফিসারের সর্বনিম্ন বেতন ৩৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত! প্রবেশনারি অফিসার লক্ষ্য পূরণ করতে পারলে ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ হাজার টাকা বেতন বেড়ে যায়।

জুনিয়র অফিসার

জুনিয়র অফিসারের সর্বনিম্ন বেতন ২৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত! 

৪.দ্রুত পদোন্নতি হয়

এই সেক্টরে প্রতি বছরেই পদোন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে! আপনার বেতন- ভাতাদি নির্ভর করে ইন্ডিকেটর কিংবা স্যালারি ইন্ডিকেটর পরিমাপের ওপর! যদি নিজের পারফরম্যান্স দেখে তাৎক্ষণিক স্বীকৃতি পেতে চান, তবে প্রাইভেট ব্যাংক আপনার জন্য উপযোগী!

এই সেক্টরে নিজের লক্ষ্য পূরণ করে বা ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়ে সাথে সাথে প্রমোশন পাওয়ার উপায় আছে! যেখানে সরকারি ব্যাংকে কয়েক বছর অর্থাৎ ৫ থেকে ৮ বছর পর পর প্রমোশন পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া প্রাইভেট ব্যাংকের মতো সরকারি ব্যাংকের বেতন বেশি হয় না! এই ক্ষেত্রে বিশেষ সীমাবদ্ধতা আছে! সরকারি ব্যাংকের সুবিধার মধ্যে প্রধান সুযোগ সুবিধা হলো চাকরির স্থায়িত্বতা।

প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির বয়সসীমা

প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির বয়সসীমা

সরকারি ব্যাংকের মতো এখন থেকে বেসরকারি বা প্রাইভেট ব্যাংকে স্থায়ী পদে কেউ ৫৯ বছরের বেশি চাকরি করতে পারবেনা! তবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকরির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬৫ বছর! তবে! ব্যাংক ইচ্ছা করলে বিশেষ প্রয়োজনে ৬৫ বছরের বেশি বয়সের যে কাউকে পরামর্শ বা উপদেষ্টা হিসেবে ব্যাংকে নিয়োগ দিতে পারবে! 

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে যদি কারো বয়স ৬৫ বছর হয় তাহলে সে কোন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক অর্থাৎ (এমডি) পদে থাকতে পারবে না। বাংলাদেশের প্রচলিত বিধান ও প্রথা অনুযায়ী রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক ও সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীরা বয়স সীমা অনুযায়ী অবসরে যান। বর্তমানে সরকারি চাকরির মেয়াদ ৫৯ বছর পর্যন্ত।

প্রাইভেট ব্যাংক বা বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা তাদের পরিচালনা পর্ষদ নির্ধারিত বয়সসীমা অনুযায়ী অবসরে যায়! এমডি ব্যতীত অন্যান্য পদে চুক্তি ভিত্তিক কর্মকর্তার ক্ষেত্রে বয়স সীমা নির্ধারিত না থাকায় অনেক কর্মচারী ৬৫ বছর বয়স হওয়ার পরও তাদের পদে বহাল থাকেন।

অবশেষে আমি আশা করতে পারি, প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির যোগ্যতা! প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির বেতন , প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরির সুবিধা! এবং বয়সসীমা ইত্যাদি এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। আমাদের তথ্যগুলো আপনার কাছে যদি ভালো লাগে এবং উপকৃত হন তাহলে আমাদের এই লেখাগুলো আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। 

Leave a Comment