অন্যান্য ব্যাংকিং সিস্টেমের মতো বিকাশও তাদের গ্রাহকদের দিচ্ছে বিকাশ সঞ্চয়ের সুযোগ সুবিধা। বিকাশ কর্তৃপক্ষ বিকাশ ইন্টারেস্ট হার বা সঞ্চয় হার এর ব্যাপারে সম্পূর্ণ একটা গাউডলাইন দিয়েছে তাদের ওয়েবসাইটে।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিকাশ নাম শুনে নাই এমন এলিয়েন খুজে পাওয়া প্রায়ই দুষ্কর। তেমনি বিকাশ গ্রাহকদের মধ্যে বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এর সঞ্চয় বা মুনাফা বা ইন্টারেস্টের কথাটা খুব কম গ্রাহকেই শুনে না থাকবে।
বিকাশে মাধ্যমে সাধারণত ব্যাংকিং এর কাজটাই করে থাকি। কিন্তু মোটামোটি সবাই নিজেদের বিকাশ একাউন্টে কিছু না কিছু টাকা সঞ্চয় রাখি। আর সঞ্চয়কৃত টাকার মাধ্যমেই এবার বিকাশ তার গ্রাহকদের দিচ্ছে নিদির্ষ্ট পরিমাণ ইন্টারেস্ট। এছাড়াও বর্তমানে চালু আছে বিকাশ রিওয়ার্ডস পয়েন্ট আর্জন। এটার মাধ্যমে ক্যাশব্যাকের একটি সুযোগ রয়েছে।
টাকার পরিমাণ এবং সময়ের উপর নির্ভর করে গ্রাহকরা মাসে পাবে সেই ইন্টারেস্ট।
বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং সঞ্চয় হার বা ইন্টারেস্ট হার বা মুনাফার হার
- ১০০০ টাকা থেকে ৫০০০.৯৯ টাকা একাউন্টে থাকলে গ্রাহক পাবে মোট টাকার ১.৫% ইন্টারেস্ট।
- ৫০০১ টাকা থেকে ১৫০০০.৯৯ টাকা পর্যন্ত একাউন্টে থাকলে বিকাশ গ্রাহক পাবে মোট টাকার ২% ইন্টারেস্ট।
- ১৫০০০.১ টাকা থেকে ৫০০০০.৯৯ টাকা পর্যন্ত একাউন্টে থাকলে বিকাশ গ্রাহক পাবে মোট টাকার ৩% ইন্টারেস্ট।
- আর ৫০০০০.১ থেকে অধিক টাকা টাকা পর্যন্ত একাউন্টে থাকলে বিকাশ গ্রাহক পাবে মোট টাকার ৪% ইন্টারেস্ট।
এখন এই যে সঞ্চয়ের হার বা ইন্টারেস্ট বিকাশ তার গ্রাহকদের দিবে তা কিন্তু বাৎসরিক হিসেব মাসিকভাবে দিয়ে দিবে। কিন্তু এটা কীভাবে?
আচ্ছা ঠিক আছে, তাহলে চলুন দেখি এই হিসেবটা।
ধরুণ কোনো গ্রাহকের বিকাশ একাউন্টে মোট টাকা আছে ২০০০০ টাকা। তাহলে নিয়ম অনুযায়ী সে ২% ইন্টারেস্ট পাবে। তাহলে বিশ হাজার টাকার ২% আসে ২০০০০*২/১০০ = ৪০০ টাকা। আর টাকা টা সে গ্রাহক পাবে ১ বছর পর। এখন বিকাশ যেহেতু মাসিকভাবে দিয়ে দিবে, সে হিসেবে ৪০০/১২ = ৩৩.৩৩ টাকার মতো আপনি মাস শেষে পেয়ে যাবেন বিকাশ ইন্টারস্টে বা মুনাফা।
তাহলে উপরের বর্ণনা থেকে মোটামোটু একটা ধারণা নেওয়া গেল যে বিকাশের সঞ্চয় হার বা মুনাফা বা ইন্টারেস্টের হার সম্পর্কে।
বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এর ইন্টারেস্ট বা মুনাফা বা সঞ্চয় পাওয়ার শর্তসমূহ
- বিকাশ গ্রাহকদের KYC ফরম বিকাশ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত হতে হবে
- আপনার একাউন্টটি একটিভ থাকতে হবে
- মাসে কমপক্ষে বিকাশ গ্রাহককে ২ টি আর্থিক লেনদেন (“ক্যাশইন”, “ক্যাশআউট”, “ATM ক্যাশআউট”, “পেমেন্ট”, “ সেন্ডমানি” অথবা “ মোবাইল রিচার্জ ”) করতে হবে
- গ্রাহকের বিকাশ একাউন্টে কমপক্ষে একাউন্টে কমপক্ষে ১,০০০ টাকা ব্যালেন্স থাকতে হবে
- প্রত্যেক মাস শেষে গড় সঞ্চয়কৃত টাকার উপর নির্ভর করে বিকাশ গ্রাককে ইন্টারেস্ট দিবে
উপরোক্ত শর্তগুলো যদি কোনো গ্রাহক তার একাউন্টে সফলভাবে পূরণ করতে পারে, তাহলে সেই গ্রাহক বিকাশ থেকে সঞ্চয় বা মুনাফা পেতে পারে। তবে শর্তগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
এবার চলুন জানা যাক কীভাবে একজন গ্রাহক সেই বিকাশ মুনাফা বা ইন্টারেস্ট যদি না নিতে চায়, সেক্ষেত্রে সে কীভাবে বিকাশ থেকে ইন্টারেস্ট বা মুনাফা গ্রাহণ বন্ধ করবে।
বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এ ইন্টারেস্ট বা মুনাফা বন্ধ করার পদ্ধতি বা নিয়ম
- প্রথমে গ্রাহককে বিকাশ হেল্পলাইন নাম্বার ১৬২৪৭ এ কল করতে হবে
- এরপর গ্রাহক তার ভাষা পছন্দ করবে। এক্ষেত্রে বাংলার জন্য ১ চাপবে
- এরপর গ্রাহকের জমানো টাকা বা ইন্টারেস্ট সম্পর্কে জানতে ৫ চাপবে
- এবার ইন্টারেস্ট সক্রান্ত তথ্যের জন্য ১ চাপবে
- যদি গ্রাহক ইন্টারেস্ট নেওয়া বন্ধ করতে চায় তাহলে তাকে ১ চাপতে হবে এবং যদি পুনরায় ইন্টারেস্ট চালু করতে চায় তাহলে তাকে ২ চাপতে হবে
- বিকাশ অফিস সাথে সাথেই আপনার অনুরোধটি গ্রাহণ করবে এবং আপনাকে মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দিবে
তো এই ছিল আজকে আমাদের বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এর সঞ্চয় হার বা ইন্টারেস্ট বা মুনাফা সম্পর্কে সব কিছুর একটা আর্টিকেল। এই থেকে অবশ্যই একজন গ্রাহক তার বিকাশ একাউন্টের মুনাফা সম্পর্কে একটা ভালো ধারণা হয়ে যাবে এবং পাশাপাশি কীভাবে ইন্টারেস্ট চালূ বা বন্ধ করতে পারে একজন গ্রাহক তাও আজকে জানতে পারা গেল।