কী খাবার খেলে মোটা হওয়া যায়? এই জিনিসটা আসলেও একটা চিন্তার বিষয়।আর যারা জীর্ণ-সীর্ণ তাদের তো বটেই। সারাদিন আমরা কত খাবারই না খাই, কিন্তু সব খাবার কী শরীর মোটা করে? নিশ্চয় না, বরং অনেক খাবার আমাদের ওজন-কে কমিয়ে দেয়।
মোটা হওয়ার জন্য প্রথমত আমাদের উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। আর এই জন্যই আজকের এই মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা পর্বে আমরা রেখেছি:
- মোটা হওয়ার জন্য কী কী খাবার খাবেন?
- কোন স্পেশাল খাবারগুলো খাবেন?
- দিনে কত বার খাবেন?
আর এই আর্টিকেলের শেষে স্পেশাল কিছু খাবারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং কী নিয়মে খাবার খেলে মোটা হওয়া যায়।
তো চলুন এক নজরে মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা দেখি
- Fat জাতীয় খাবার
- ডিম
- কিসমিস
- ঘি+চিনি
- আলু
- বাদাম
- ফেন ভাত বা ভাতের হার
- মধু
- সবজি-ফল
- আম
প্রথমেই হচ্ছে Fat জাতীয় খাবার বেশি খান। একটু বেশি চকলেট, মেওনিচ মাখন, দুধ, ডিম একটু বেশি করেই খেতে হবে। এসব খারে থাকা Fat ও calorie ওজন বাড়ানোর জন্য খুবই জরুরি। তবে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে এসব না খাওয়াই শরীরের জন্য সবচেয়ে উত্তম। সেক্ষেত্রে একটু exercise করা উত্তম যাতে অতিরিক্ত চর্বি শরীরের মধ্যে না জমে। আরো খেতে পারেন আম ও দুধ। প্রতিদিন ১-২টি পাকা আম খেতে পারেন এবং সাথে কুসুম গরম ১ গ্লাস দুধও খেতে পারেন। অথবা আম ও দুধ এক সাথে মিশিয়ে সেত বানিয়েও খেতে পারেন। মাস খানেকের মধ্যেই উল্লেখযোগ্য পরির্বতন চোখে পড়বে।
নিয়মিত খান কিসমিস ও ডুমুর। কিসমিস ও শুকনো ডুমুর ফল উচ্চ ক্যালরি সম্পূর্ণ। ৬টি শুকনো ডুমুর ফল ও ৩০গ্রাম কিসমিস একসাথে পানি বা দুধের সাথে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি সহ ফলগুলো খাবেন। ২০-৩০দিনের মধ্যে ভালো একটা ফলাফল পাবেন।
খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুণ ঘি। ঘি আর চিনির মিশ্রণ ( ১ চা চামচ ঘি এবং ১ চা চামুচ চিনি মিশিয়ে) প্রতিবেলা খাবারের আধা-ঘন্টা আগে খেয়ে নেন। একমাস খাওয়ার পর লক্ষ্যণীয় পরির্বতন চোখে পড়বে।
খাবারে রাখুন আলু। প্রচুর শর্করা আছে আলুতে। তাই নিশ্চিতভাবেই বলা যায় নিয়মিত আলু খেলে ওজন বাড়বে। আলু তরকারীতে দিয়ে, বাটার করে, ফ্রাই করে বা গ্রিল করে, ভালোমানের তৈল দিয়ে ভেজে খাওয়া শুরু করে দেন নিয়মিত।
আরো খাবেন বাদাম।প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ৬-৭টা কাজু বাদাম ও কিচমিচ খালি পেটে খাবেন।এর থেকে সবচেয়ে ভালো হয় এর আগের দিন রাতে যদি এক গ্লাস পানিতে কিছু কিচমিচ ও কাজু বাদাম ভিজিয়ে রেখে দেন। এবং পরের দিন সকালে উঠে সেই পানি সহ বাদাম, কিচমিচ খেয়ে নিলেন।
আরো খেয়ে নিন ফেন ভাত। ফেন ভাত বা যাকে আমরা ভাতের মার বলি। আর এই ফেন ভাত সাহায্য করে মোটা হতে এবং ওজন বৃদ্ধি করতে।সাধারণত ভাতের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও Fat থাকে।আর আমরা যখন এই মার ফেলে দেই তখন তা চলে যায়। এই ভাতের মার এক টানা ১মাস খেলে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যায়।
মধু! চেষ্টা করুণ, রোজ রাত ঘুমানোর আগে এক কাপ ঘন দুধের সাথে এক চা-চামুস মধু মিশিয়ে খেতে। ওজন বা মোটা হওয়ার জন্য মধু খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আরো খাবেন সবজি এবং ফল।প্রচুর শাক-সবজি ও ফল খান। ভাবছেন, এগুলো তো ওজন কমানোর জন্য খায়।ওজন বাড়াতেও কিন্তু এই সবজি এবং ফলমূল আবার ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।
এমনকি এমন অনেক ফল-মূল আছে যেগুলো উচ্চ ফেট এবং ক্যালরিযুক্ত। যেমন: আম-কাঁঠাল, কলা, পাঁকা পেপে, জাম-লিচু, মিষ্টি কুমড়া, আলু ইত্যাদি ফল-সবজি খেলে মোটা হয়ে যাবে।
এবার চলুন দেখা যাক কোন বিশেষ খাদ্যগুলো আপানার খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত:
আপনার নিয়মিত খাবারের পাশাপাশি অবশ্যই উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার যোগ করতে হবে।উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা না হলে এই খাবারগুলো খেতে পারেন অনায়াসে। যেমন: ঘি-মাখন, ডিম-পনির , কোমল পানি জাতীয় সব কিছু এবং গরু-খাসির মাংস, আলু ভাজা, মিষ্টিকুমড়া ভাজা ইত্যাদি খেতে হবে। ওজন বাড়াতে হলে ঘন ঘন খাবার খেতে হবে রুটিন মাফিক।
আপনি যদি আপনার ওজন বাড়াতে চান, তাহলে দিনে অন্তত ৫-৬ বার খাওয়া খান। আমরা সাধারণত দিনে ৩ বেলা খাই। আপনি দিনে ৫-৬বার খান তবে পরিমাণটি নিদির্ষ্ট
কলা-আম ইত্যাদি ফল বেশি পরিমাণে খান, এতে কোনো আপনার সমস্যা হবে না। পাশাপাশি অন্য ক্যালরিযুক্ত খাবারগুলোও খান। তবে জাঙ্ক ফুড খাবেন না। কেননা আপনি যত পরিমাণ জাঙ্ক ফুড খাবেন তার চেয়ে বেশি আপনার শরীর থেকে প্রোটিন বের হয়ে যাবে। তাই ভাজা বাদ দিয়ে বাদাম, পরিমিত মিষ্টি ও ঘরে তৈরি নানান খাবার খেয়ে যান।
এবার চলেন জানা যাক কোন সঠিক পদ্ধতিতে খাবার খাবেন?
আপনি খাবার খাচ্ছেন কিন্তু কোনো নিয়ম মেনে খাচ্ছেন না, এতে করে আপনার কোনো কাজই হবে না বরং এর বিপরীত হবে।আপনার ওজন কোনো ভাবেই বাড়বে না। আপনি যদি নিয়ম মেনে সঠিকভাবে একটা রুটিন করে দৈনিক খাবার খান, তাহলে আপনার ওজন বাড়তে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
দিনের একটি বড় তালিকা তৈরি করুণ ও সেটি পালন করুন ঘড়ি ধরে।মোটামোটি ৪ সপ্তাহের মধ্যে একটি ইতিবাচক খবর পেয়ে যাবেন। ওজন বাড়ে সহায়ক খাবার গুলো রোজ খাবেন ও পর্যাপ্ত ঘুমাবেন। এই নিয়মে এবং এই খাবারগুলো রুটিন-মাফিক মেনে চলেন, তাহলে একমাস বা তার অধিক সময়ে আপনার ওজন বাড়বে।
ডায়াবেটিস রোগীর যে ব্যায়ামগুলো দরকার
ডায়াবেটিস কমান খুব সহজে
আর এই খাবারগুলো খেয়েও যদি ওজন না বাড়ে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।কারণ আশা করা যায় আপনার অন্য কোনো সমস্যা থাকলে ওজন বাড়ায় বাধার সৃষ্টি করবে এই টিপসগুলো মানার পরও।
যাইহোক, আজকের মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা পর্বে যা জানতে পারলাম তা মনে রাখার চেষ্টা করবো। তবে উপরের তথ্যগুলো অবশ্যই একজন গর্ভবর্তী মায়ের খাদ্য তালিকার সাথে সম্পর্কিত নয়।