ত্বকের যত্ন | ত্বকের যত্নে নারী-পুরুষদের করণীয়

ত্বকের যত্ন

নিজেকে সুন্দর দেখাতে কে না পছন্দ করে! এই সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য বাহিরে থেকে কত কিছু ত্বকে লাগানো হয়। কিন্তু নিজেরা যদি একটু সচেতন হলে, খাবারে একটু পরিবর্তন নিয়ে আসতে যদি পারি, তাহলে খুব ভালোভাবে নিজেকে ইন্টারনালি সৌন্দর্য করে তুলতে পারি।

গ্রামে কিংবা শহরে, এখন সবাই ত্বক নিয়ে আগের চেয়ে অনেক সচেতন এবং অ্যাক্টিব। ত্বক ভালো রাখতে সব কিছুই করতে রাজি এবং বিভিন্ন লোশন, ক্রিম, প্রাকৃতিক উপাদান ত্বকে প্রয়োগ করে থাকে । কিন্তু তাদের অধিকাংশই ভালো ফলাফল পায় না কারণ তারা সঠিকভাবে এবং সঠিক সময়ে এগুলো ব্যবহার করতে পারে নাই।

ত্বকের যত্ন সম্পর্কে আজেকে যা যা জানবো

  • গরমে ত্বকের যত্ন
  • শীতে শুষ্ক বা রুক্ষ ত্বকের যত্ন
  • হেমন্তে ত্বকের যত্ন
  • ঘরোয়া পরিবেশে বা পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন
  • মধু দিয়ে ত্বকের যত্ন
  • প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন
  • সকালে ত্বকের যত্ন
  • রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের যত্ন
  • তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন
  • বাচ্চাদের বা শিশুদের ত্বকের যত্ন
  • বয়ঃসন্ধিকালে ত্বকের যত্ন
  • ছেলেদের ত্বকের যত্ন
  • মেয়েদের ত্বকের যত্ন
  • মহিলাদের ত্বকের যত্ন
  • প্রতিদিন ত্বকের যত্ন
  • অ্যালোভেরা/এলোভেরা দিয়ে ত্বকের যত্ন
  • সংবেদনশীল ত্বকের যত্ন
  • চা পাতা দিয়ে ত্বকের যত্ন
  • ত্বকের যত্নে বরফ
  • ত্বকের যত্নে মসুর ডাল
  • ত্বকেরে যত্নে দুধের সর
  • মিশ্র ত্বকের যত্ন
  • গর্ভকালীন ত্বকের যত্ন
  • ত্বকের যত্নে শসা
  • ত্বকের যত্নে ফেইসপ্যাক
  • ত্বকের যত্নে ভাত
  • ত্বকের যত্নে বেসন
  • ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল
  • রোজায় ত্বকের যত্ন
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ত্বকের যত্ন
  • ত্বকের যত্নে আলু
  • ত্বকের যত্নে কমলা খোসার ব্যবহার
  • ত্বকের যত্নে ঘি
  • ত্বকের যত্নে ভালো ফেসওয়াস

গরমে বা গ্রীষ্মে ত্বকের যত্ন

  • গরমকালে বা গ্রীষ্মকালে শরীরে প্রচুরপরিমাণে টক্সিন বা বিশাক্ত পদার্থ শরীরে জমে। তখন শরীর থেকে অনেক বেশি ঘাম ও দূর্গন্ধ তৈরি হয়। এতে করে শরীরে হাইড্রেট কমে যায় এবং শরীর এবং ত্বক অনুজ্জ্বল হয়ে পড়ে। এমোতবস্থায় গরমে ত্বকের সুস্থ্যতার জন্য বেশি বেশি করে পানি পান করা উচিত। এতে করে শরীর বা ত্বক হাইড্রেট থাকবে এবং ত্বকে উজ্জ্বলতা আসবে।
  • ঘামের সাথে যেহেতু তেল এবং অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ বের হয়,  তাই গরমে ত্বকের যত্নে মেয়েদের টোনার ব্যবহার করা উচিত। টোনার তীব্র গরমে তৈলাক্ত ভাব কমিয়ে উজ্জ্বলতার ভাব তৈরি করে।
  • গরমে মেয়েরা কম মেকাপ করার চেষ্টা করুণ। গরমে মেয়েদের কম মেকাপ ত্বকের জন্য স্বস্থিদায়ক।
  • গরমে শিশুদের ত্বকের যত্নের জন্য বেশি পানি ও ঠান্ডায় রাখার চেষ্টা করুন।
  • বিভিন্ন ধরনের কাচা শাক-সবজি খেতে চেষ্টা করুণ গরমে।

উপরোক্ত পয়েন্টগুলো মেনে চলার মাধ্যমে কিছুটা হলেও গরমে ত্বকের যত্ন নেওয়া যাবে। তবে গরমে ক্ষতিকারক বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াজনক কোনো রকম ক্রিম ব্যবহার করা যাবে না।

শীতে শুষ্ক বা রুক্ষ ত্বকের যত্ন

  • বাংলাদেশে ছেলে মেয়ে মোটামোটি সবাই শীতে গোসলের সময় গরম পানি ব্যবহার করি। তবে মাথা এবং চুল ধোয়ার কাজে গরম পানি ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
  • যেহেতু শীতে ত্বক থেকে পানি বের হয়ে যায় এবং ত্বকে শুষ্ক ও রুক্ষ একটা ভাবে তৈরি করে, তাই এর জন্য গোসলের পানিতে কয়েকফোটা বাদাম তেল বা অন্য তেল দিয়ে গোসল করতে হবে ত্বক ভালো রাখার জন্য।
  • প্রতিবার গোসল অথবা মুখ ধোয়ার পর আমাদের সবাইকে লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে যাতে করে শীতকালের বাহিরের আদ্রতা শরীর থেকে পানি বের করে না নিয়ে যেতে পারে।
  • শীতকালে রোদে যাওয়ার আগে মেয়েদের সানক্রিম অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।
  • শীতকালে শিশুদের ত্বকে ফাটা ধরে। সেক্ষেত্রে ত্বকের যত্নে শিশুদের বিভিন্ন টাইপের সফট ক্রিম বা লোশন আছে, এগুলো তাদের নরম ত্বকের জন্য খুবেই উপকারী।

শীতকালে শিশু হতে বৃদ্ধ, মেয়ে হতে ছেলে সবাইকে প্রচন্ড শীতের মাধ্যমে ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত এবং সেটা সঠিক পদ্ধতিতে বা নিয়মে। অহেতুক ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকতে হবে যা ত্বকের জন্য অনেক ক্ষতিকারক।

হেমন্তে ত্বকের যত্ন

  • যেহেতু হেমন্তে সূর্যের তাপ একটু বেশি থাকে, তাই ত্বকের যত্নের জন্য বাহিরে বের হওয়ার আগে সানক্রিম অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।
  • যত সম্ভব হেমন্তে অ্যালকোহল জাতীয় প্রোডাক্ট থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।
  • গোসলের সময় পানিতে কয়েকফোটা গ্লিসারিন দিয়ে গোসল করতে হবে।
  • অতিরিক্ত সূর্যের তাপ ত্বককে শুষ্ক ও রুক্ষ করে দেয়, তাই ওয়েল ব্যাসড ক্রাব ব্যবহার করতে হবে।
  • হেমন্তে তুলনামূলকভাবে ভারী ক্রিম ব্যবহার করতে চেষ্টা করতে পারেন।

এ ছিল হেমন্তে ত্বক যত্ন নেওয়ার টিপস। তবে আরো অনেক উপায় আছে, যেগুলো প্রয়োগের মাধ্যমে হেমন্তে যেকেউ তার ত্বকের যত্ন নিতে সক্ষম।

ঘরোয়া পরিবেশে বা পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন

  • ঘরোয়া পদ্ধতিতে মাটি, লেবু, দুধ ও হলুদের মাধ্যমে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়। প্রতিদিন এক চা-চামচ মুলতানি মাটি, নিদির্ষ্টে পরিমাণে কয়েক ফোটা লেবুর রস, এক চা-চামচ হলুদ ও দুধ নিয়ে মিক্স করে মুখে লাগাতে পারে এবং তা যদি সম্ভব হয় সপ্তাহে ১ বার ২ বার ত্বকে লাগানো যেতে পারে।
  • কাঁচা দুধ, ভিনেগার, ময়দা ও চালের গুড়া মিক্স করে ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • শুধু মাত্র কাঁচা হলুদ বেটে মুখে লাগিয়ে রাখলে মুখ ও ত্বক উজ্জ্বলতার ভালো ফলাফল  পাওয়া যায়।

উপরোক্ত কয়েকটা বিষয় উল্লেখ  করালাম যার মাধ্যমে যে কেউ ঘরোয়া পরিবেশে থেকেই এই পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিতে পারবে।

মেয়েদের চলমান ট্রেন্ডি মেহেদী ডিজাইন

মধু দিয়ে ত্বকের যত্ন বা ত্বকের যত্নে মধু

  • ত্বকে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বলতা আনার জন্য দৈনিক ২বার এক চা-চামচ মধু মুখে লাগান এবং কয়েক মিনিট রাখার পর গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • দুধ এবং মধু এক সাথে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুণ এবং ত্বকে লাগান। যা ত্বক তথা মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
  • রোদে পোড়া দাগ দূরের জন্য মধুর সঙ্গে চন্দন কাঠের পোড়া মিক্স করে ত্বকে লাগান।
  • ত্বক টান টান করাতে মধুর সঙ্গে ডিম মিক্স করুণ এবং ত্বকে লাগান। কয়েক মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন, এতে করে মুখে ও ত্বকে একটা উজ্জ্বলতার টানটান ভাব আসবে।

এই কয়েকটি ত্বকের উপকার পাওয়া সম্ভব মধুর ব্যবহারের মাধ্যমে। তবে সঠিক পদ্ধতিতে মধু ব্যবহার করতে পারলে ত্বকের জ্ন্য খুবই উপকারী হবে।

প্রাকৃতিক ‍উপায়ে ত্বকের যত্ন

  • ত্বকের মৃত কোষগুলোকে অপসারণের জন্য লবণ, চিনি, মধু ও নারিকেল তেলের মিশ্রণ মুখে দিলে তা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
  • ত্বক পরিষ্কার রাখার জন্য আঙ্গুর ব্যবহার করুন ত্বকে। এতে করে খুব তাড়াতাড়ি ত্বকে পরিষ্কার ভাব চলে আসবে।
  • চোখের ক্লান্তি দূর করার জন্য ঠান্ডা আইস্ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
  • ত্বক সতেজ রাখার জন্য গোসলের আগে পেঁপের মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে রাখুন।

আরো অনেক প্রাকৃতিক পদ্ধতি আছে যা ত্বকে প্রয়োগের মাধ্যমে ত্বকের চাকচিক্য ভাবে ফিরিয়ে নিয়ে আসা যায় এবং ত্বকের যত্নে তা খুবই উপকারী।

সকালে ত্বকের যত্ন

দিনের শুরুতেই ত্বকের যত্ন নেওয়া অতীব জরুরি। সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে দিনের শুরুতে ত্বকের প্রতি কিছু সময় ব্যায় করা দরকার।

  • ত্বককে পরিষ্কার করার জন্য কোমল ক্লিনজার ব্যবহার করুন এবং খেয়াল রাখুন ক্লিনজার ব্যবহারের সময় ত্বক যাতে অতিরিক্ত শুষ্ক না হয়। ত্বকে অবশ্যই আদ্রতা বজায় রাখতে হবে।
  • স্ক্রাবার ব্যবহার করা যেতে পারে সকাল বেলায়। স্ক্রাবার ব্যবহারের ফলে ত্বকের মৃত কোষগুলো অপসারণ হয়।
  • যাদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত, তারা প্রতিদিন সকালে টোনার ব্যবহার করতে পারেন।
  • চামড়া বা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন সকাল বেলা সিরাম ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • অবশ্যই সকালে ঘর থেকে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিম ত্বকে লাগিয়ে ঘর থেকে বের হতে হবে।

এই ছিল মোটামোটি একটা ছোট্র ধারণা যে, কীভাবে সকাল বেলা একজন তার ত্বকের যত্ন নিবে। এখানের সব স্টেপগুলো ফলো না করলেও চলবে তবে অধিকাংশগুলোই ত্বকের জন্য ভালো।

রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের যত্ন

  • রাতে ঘুমানোর আগে ত্বক পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে বেবি ওয়ের বা ওলিব ওয়েল দিয়ে মুখ বা ত্বককে মেসাজ করুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং এবার ভালো মানের কিছু ফেসওয়াস দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • ত্বক ধোয়ার পর অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে আপনার ত্বকের যথেষ্ট আদ্রতার। এক্ষেত্রে ময়েশ্চারাইজিং নাইট ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন এবং সাথে অন্য ক্রিমগুলোও ব্যবহার করতে পারেন।
  • ঘুমানোর আগে পাঁকা কলা, পেঁপে ও ময়দার মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে কয়েক মিনিট রাখার পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধোয়ে ফেলুন। এতে করে ত্বকে কিছুটা উজ্জ্বলতার ভাব আসবে।

রাতে মেয়েদেরে এবং ছেলেদের ত্বকের যত্ন অনেকভাবেই নেওয়া যায় তবে এখানে মাত্র ৩টি বিষয় উল্লেখ করা হলো। আরো অনেক বিষয় আছে, যেগুলোয় একজন ত্বকের প্রতি সচেতন মানুষ মেনে চললে দিন শেষে সে ত্বকের ক্ষেত্রে উপকৃত হবে।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য যত্ন

এমনিতে গরম, তার উপর আবার তৈলাক্ত ত্বক। বিষয়টা একেবারে বিশ্রি হয়ে উঠে গরম কালে। গ্রীষ্মে ত্বকের যত্ন না নিলে তৈলাক্ত ত্বকে পিম্পল সহ নানা রকম বিচি উঠার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তবে খুব সহজে গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়।

  • দিনে কয়েকবার মুখ পরিষ্কার করতে হবে এবং মুখ বা ত্বক থেকে তেল দূর করতে হবে। এর জন্য সাবান বা ফেসওয়াস দিয়ে ‍ত্বক ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • ঠান্ডা জলে এক চিমটি লবণ দিয়ে দিনে কয়েকবার (৫-৮ বার) মুখ ধুতে হবে। লবণ দেওয়ার মূল কারণ হচ্ছে লবণ এমন একটি পদার্থ যা ত্বক থেকে অতিরিক্ত লবণ শুষে নেয়।
  • দিনে কয়েকবার ফেস ক্লিঞ্জার ব্যবহার করা যেতে পারে মুখ পরিষ্কার রাখার জন্য।
  • গরমে এবং তৈলাক্ত ত্বকে ভারী মেকআপ করা থেকে যতদূর সম্ভব বিরত থাকুন। আর বিকল্প হিসেবে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
  • টমেটোর জুস ও মধু মিক্স করে মুখে কয়েক মিনিট লাগিয়ে রাখতে পারেন, এতে করে ত্বক আদ্র থাকবে এবং তৈলাক্ত ভাব কিছুটা দূর হবে।
Read More  Details About Data Entry Jobs From Home (Online)

ত্বকে তৈলাক্ত ভাব প্রায় অধিকাংশ মানুষেরই সমস্যা। তবে কিছু দিক নির্দেশনার মাধ্যমে এসব সহজ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব খুব সহজেই যত্ন নেওয়া যায় ত্বকের।

বাচ্চাদের বা শিশুদের ত্বকের যত্ন

শিশুদের ত্বক খুব সহজেই অপরিষ্কার হয়ে যায়। সারাদিনের খেলা-ধুলায় বা অন্য কারনেও বাচ্চাদের ত্বকের অনেক ক্ষতি হয়। তবে অল্প কিছু সময়ের মাধ্যমে তাদের পরিষ্কার করাও সম্ভব এবং ত্বকের যত্ন নেওয়াও সম্ভব।

  • নবজাতক শিশুর ত্বক সাধারণত মোমের মতো নরম এবং কোমল থাকে, তাই তখন তাদের বেশি পরিচর্যা প্রয়োজন হয় না। তবে তখন কিছু ড্রাই টিস্যু বাজারে পাওয়া যায়, ঐগুলো দিয়ে শিশুদের গা ঘন ঘন পরিষ্কার করা যেতে পারে।
  • শিশুদের ঘন ঘন গোসল বা স্নান, তাদের জন্য খুবই খারাপ। তাদের শরীর থেকে এতে করে আদ্রতা বের হয়ে যাবে ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে। এ জন্য তাদের সপ্তাহে ৩-৪ বার স্নান করালেই যথেষ্ট। তবে গরম কালে শিশুদের ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে কিছুটা বেগ পেতে হয় মা’দের। গরমে শিশুদের শরীরের ঘাম ত্বকের বেশি একটা ক্ষতি করতে পারে না। তবে বেশি ঘামানো শিশুদের কোমল ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
  • শিশুদের পাউডার ব্যবহার করা বেশিরভাগ সময় লাগে না। কেননা এমনিতে সাধারণ ঘরের হাওয়ায় তাদের শরীর শুকিয়ে যায়। কিন্তু একান্তই যদি পাওডার লাগানোর দরকার লাগে তাহলে বাজারে অনেক ভালো মানের বেবি পাউডার পাওয়া যায়। এগুলো শিশুদের শরিরে লাগাতে হবে। তবে শীতকালে শিশুদের ত্বকের যত্নে কিছুটা বেগ পেতে হয়। কেননা তখন তাদের গা ফেটে যায়। বিভিন্ন লোশন পাওয়া যায়, এই লোশনগুলো শিশু বা বাচ্চাদের জন্য শীতকালে খুবই উপকারি। তাই ত্বকের যত্নে শিশুদের শীতকালে এসব লোশন বা পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • কোনো শিশুদের শরীরে একজিমা বা এই টাইপের অনেক সমস্যা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই মা-বাবাদের অভিজ্ঞ শিশু ডাক্তারের নিকট যেতে হবে।

শিশুদের ত্বক খুবই কম হওয়াই নিজে থেকে বেশি কিছু করতে গেলে অনেক সমস্যা দেখা দেয় তাদের কোমল শরীরে। তাই যদি পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকে, এসব ক্ষেত্রে নিজে থেকে কোনো কিছু না করাই ভালো।

বয়ঃসন্ধিকালে ত্বকের যত্ন

বয়ঃসন্ধিকাল হলো ছেলে এবং মেয়েদের বাড়তি হওয়ার সময়। এ সময় মেয়ে এবং ছেলে উভয়ের ত্বকের প্রতি মনোযোগ দেওয়া এবং যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

  • বয়ঃসন্ধিকালের প্রধান সমস্যা হলো মুখে বা ত্বকে ব্রণ উঠা। ত্বক পরিষ্কার করতে তরুণ তরুণীদের ফেসিয়াল ক্রিম বা ক্লিনার অথবা ফেসিয়াল জেল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে।
  • যাদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত, তাদের পানি যুক্ত ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
  • ১৫ বছরের পর যেকোনো পার্লার বা সৌন্দর্য বদ্ধক ঘর থেকে মুখ পরিষ্কার করে আনতে হবে।
  • হাত-পা সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে।

বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে মেয়েদের দৈহিক পরিবর্তনের পাশাপাশি তাদের ত্বকেরও পরিবর্তন হয়। তাই তাদের ত্বকের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে বয়ঃসন্ধিকালে।

ছেলেদের ত্বকের যত্ন

ছেলেদের ত্বকের যত্ন

সারাদিনের ধূলাবালি, সূর্যের তাপ, ধোয়া ইত্যাদি দ্ধারা ছেলেদের ত্বক ইফেক্ট হয়। এতে করে ছেলেদের মুখে বা ত্বকে কালো এবং অনুজ্জ্বলতার একটা চাপ সৃষ্টি হয়। দিন শেষে রোমে এসে বেশিরভাগ ছেলেরাই সাবান পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলে। গরমে কিংবা শীতে উভয় সময়ে ছেলেদের ত্বকের যত্ন নেওয়া অতীব জরুরী। অনেকের ধারণা ছেলেদের ত্বকের যত্ন বেশি নিতে হয় না। কিন্তু তারা সম্পূর্ণ ভুল ধারণার মধ্যে আছে।

ত্বকের যত্ন নেওয়াতে ছেলেদের করণীয়

  • বেশি সময় ধরে বাহিরে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বাহিরের ধূলা বালি থেকে নিজেকে যতটা সম্ভব রক্ষা করে চলতে হবে। রোদের তাপ ও ধূলাবালি ত্বকে পিগমেন্ট তৈরি করে যা কালচে ভাব তৈরি করে।
  • অতিরিক্ত ধূলাবালি, মুখের তেল থেকে ত্বককে পরিষ্কার রাখতে সপ্তাহে অন্তত ২ বার স্ক্রাব করুণ। বাজারে অনেক রকমের স্ক্রাব পাওয়া যায় তবে ফ্রুট যুক্ত স্ক্রাব ছেলেদের ত্বকের জন্য সবচেয়ে বেটার।
  • ত্বকের রক্ত চলাচল সচল রাখার জন্য রাতে শোয়ার আগে আইচ কিউব দিয়ে পুরো মুখ ঘষুণ।
  • রোদে থেকে তৈরি হওয়া পুড়া দাগ অপসারণ করতে লেবু কেটে খোসাসহ মুখের ত্বকে ভালোভাবে সঠিক উপায়ে ঘষুন।
  • হলুদের সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে মুখে মাখিয়ে নিন। এভাবে কয়েকদিন ত্বকে ব্যবহার করুন। মুখে উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।
  • মধু দিয়ে লেবু দিয়ে মিক্স করে মুখে মাখিয়ে নিন। এভাবে সপ্তাহে কয়েকবার ব্যবহার করুন।

এগুলো ছিল ছেলেদের ত্বককে পরিষ্কার করার কিছু পদ্ধতি। তবে এখন আরো অনেক নিয়ম আছে এবং অনেক দামী দামী ক্রিম আছে যা ত্বকের জন্য অনেক ক্ষতিকর।

মেয়েদের ত্বকের যত্ন

মেয়েদের ত্বকের যত্ন

শীত বা গরমে মেয়েদের ত্বকের যত্নের বিষয়টি অধিকাংশ মেয়েকেই ভাবিয়ে তোলে। তুলবেই না বা কেন? পৃথিবীতে ত্বক বা শরীর চর্চা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী এবং করে থাকে মেয়েরাই। মেয়েরা শীতে যেমন তাদের ত্বকের প্রতি যত্নশীল তেমনি গরমে বা গ্রীষ্মেও ত্বকের প্রতি খুবই সচেতন।

তবে অনেক আবেগের বশত বা ভুল করে নানান রকম বাজে ক্রিম বা ঔষধ সেবন করে থাকে ত্বকের ভালোর জন্য কিন্তু পক্ষান্তরে তা পরিণত হয় ত্বকের ক্ষতির কারণ হয়ে। তাই কিছু বিষয় মাথায় রেখে যতটা সম্ভব ঘরোয়া উপায়ে বা পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিতে চেষ্টা করতে হবে।

ত্বকের যত্ন নেওয়াতে মেয়েদের করণীয়

  • শরীরের আদ্রতা ধরে রাখতে সারাদিন প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। এতে করে শরীরে যেমন আদ্রতা বজায় থাকবে তেমনি আদ্রতা থাকার ফলে শরীরে উজ্জ্বলতা ভাব তৈরি হবে।
  • ত্বককে শীতল রাখতে টোনার বা গোলাপজল ব্যবহার করতে পারে। কেননা এটি ত্বককে শীতল রাখে যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারি।
  • ত্বককে নরম এবং আদ্র রাখার জন্য ভালো মানের ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
  • রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ত্বককে পরিষ্কার করতে হবে। এর জন্য প্রথমে লেবু ও মধুর মিক্স মুখে মাখিয়ে নিতে হবে এবং কয়েক মিনিট রাখার পর তা হালকা গরম পানি দিয়ে ধুলে ফেলতে হবে। তারপর যেকোনো একটা ভালো ফেসওয়াস দিয়ে মুখ মন্ডল ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • সকালে ঘুম থেকে উঠেই মুখ বা ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। সাধারণ পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ভালো মানের ফেসওয়াস ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • গরমে ত্বকের কোষ বেশি মরে। তাই এ মৃত কোষ কে অপসারণ করতে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য বেসনের সাথে হলুদ, গোলাপজল, দুধ মিক্স করে মুখে মেসাজ করতে হবে। এতে করে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন শুরু হবে এবং ত্বক ভালো থাকবে।

এখানে শুধু কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলো অ্যাপ্লাইয়ের মাধ্যমে মেয়েরা তাদের ত্বকের যত্নের পাশাপাশি ত্বক পরিষ্কারও রাখতে পারবে।

মহিলাদের ত্বকের যত্ন

ঝলমলে চেহেরা এবং ত্বক রাখার জন্য মহিলারা অনেক কিছুই করে থাকে এবং এটা তাদের এক প্রকার স্বপ্নও। পরিবারের নানান কাজ কর্ম শেষ করে, বাচ্চাদের দেখা-শুনা করে অধিকাংশ মহিলারা ত্বকের যত্নে বেশি উদাসীন। কেননা কেউ বা তখন রিলেক্স চায় আবার কেউ বা সন্তান নিয়ে ব্যস্ত থাকে আবার কেউ বা দেয় ঘুম। এমোতবস্থায়, একজন মহিলার ত্বকের যত্নে পড়তে হয় নানান সমস্যায়। এসব সমস্যা কাঁটিয়ে শরীরের যত্ন নেওয়া অনেকটাই একটা চ্যালেঞ্জের মতো। তবে কয়েকটি সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে মহিলারা তাদের চেহেরার বা শরীরে র যত্ন খুব সহজে নিতে পারে।

  • সকালে ঘুম থেকে উঠেই সাধারণ পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং সাধারণ যে কোনো ভালো একটা ফেসওয়াস ব্যবহার করতে পারেন। এরপর মুখ মুচে সানক্রিম মুখে দিতে পারেন। যা সূর্যের তাপ ও গরমের থেকে ত্বককে রক্ষা করবে।
  • রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ত্বককে পরিষ্কার করতে হবে। এর জন্য প্রথমে লেবু ও মধুর মিক্স মুখে মাখিয়ে নিতে হবে এবং কয়েক মিনিট রাখার পর তা হালকা গরম পানি দিয়ে ধুলে ফেলতে হবে। তারপর যেকোনো একটা ভালো ফেসওয়াস দিয়ে মুখ মন্ডল ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • দিনে বেশি বাহিরে যাওয়া উচিত নয়।কেননা বাহিরের ধূলাবালি মুখের মধ্যে কালো চাপ তৈরি করে এবং উজ্জ্বলতা কমিয়ে দেয়। এ জন্য বাহির থেকে এসেই ভালো ফেসওয়াস ‍দিয়ে মুখ ধুতে হবে।

বিশেষ করে মহিলারা সংসারের নানা রকম কাজ কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ত্বকের যত্নে বেশি একটা সময় ব্যয় করতে পারে না। যে কারণে মাত্র ৩টি পয়েন্ট তুলে ধরলাম যা খুব সহজে সব কাজের মধ্যেই পালন করা যেতে পারে।

প্রতিদিন ত্বকের যত্ন

আমাদের এই ব্যস্তময় জীবনে প্রতিনিয়ত ছুটে চলাই যেন আমাদের লক্ষ্য। প্রতিদিনের ছুটে চলার জন্য আমরা অনেকেই আমাদের ত্বকের যত্নের ব্যাপারে ব্যাপোরোয়া হয়ে আছি। বাহিরের রোদের তাপ, ধূলাবালি, ধোয়া ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে আমাদের প্রতিনিয়ত চলতে হয়। দিন শেষে যখন আমরা আমাদের বাসায় ফিরি তখন শরীরের তথা ত্বকের বিশ্রী একটা অবস্থা হয়ে থাকে। এ অবস্থায় অনেকে শোয়ে পড়ে আবার অনেকে ত্বকের যত্ন নেয় কিছুটা।

ব্যস্তময় জীবনে প্রতিদিন ত্বকের যত্ন নেওয়া বেশ কষ্টকর ব্যাপার কিন্তু যদি ঘরোয়া উপায়ে বা পদ্ধতিতে কয়েক মিনিটের মধ্যে সে যত্নটা নেওয়া যায়, তাহলে অনেকে এটা গ্রাহণ করবে। তো চলুন, জানা যাক ঘরোয়া পদ্ধতিতে কীভাবে প্রতিদিন একজন তার ত্বকের যত্ন নিতে পারে।

  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং সারা দিনের ময়লা দূর করার  জন্য দৈনিক ক্লিনজিং করুন। ছোলার ডাল, বেসন, হাফ কাপ চালের গুড়া, এক চা চামচ কপূর এবং হাফ কাপ কপি মিক্স করে পুরো মুখে মেখে প্রতিদিন কয়েক মিনিট ব্যবহার করতে হবে।
  • প্রতিদিন টোনার ব্যবহার করুন এতে মুখের লোমকূপের মধ্যে ধূলাবালি আটকায় না।
  • ত্বকের যত্নে দৈনিক শসা ব্যবহার করতে পারেন। এটা জানার জন্য ইউটিউব বা গুগলে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন কীভাবে ত্বকে বা মুখে শসা ব্যবহার করে বা শসার গুরুত্ব।
  • মুখমন্ডল ঠান্ডা রাখার জন্য  বরফ টুকরাও ব্যবহার করতে পারেন।
  • প্রতিদিন সকালে ফেসওয়াস ব্যবহার করতে হবে।
  • ত্বককে নরম এবং আদ্র রাখার জন্য ভালো মানের ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
Read More  জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন

অনেকভাবেই প্রতিদিন নিজের ত্বকের প্রতি যত্ন নেওয়া যায়। এখানে তো মাত্র কয়েকটা বিষয় উল্লেখ করালাম। আরো অনেক বিষয় আছে যেগুলা খুব সহজে ব্যস্তময় জীবনে পালন করা যায় এবং ত্বক পরিষ্কার করতেও বেশি ফলপ্রসূ।

অ্যালোভেরা দিয়ে ত্বকের যত্ন

কেউ যদি চায় তার ত্বক প্রাকৃতিক ভাবে উজ্জ্বল এবং পরিষ্কার থাকুক, তাহলে এখানে অ্যালোভেরার গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেওয়া যায় অ্যালোভেরা দিয়ে তবে এর ব্যবহারের অনেক নিয়ম আছে, এর মধ্যে কিছু হলো

  • ত্বক উজ্জ্বল এবং সুন্দর করতে নিয়মিত অ্যালোভেরার জেল ত্বকে ব্যবহার করুন।
  • অ্যালোভেরাতে থাকা ভিটামিন ই ত্বকে টান টান ভাব তৈরি করে।
  • ত্বকের পোড়া দাগ অপসারণ করতে সাহায্য করে অ্যালোভেরাতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।
  • ত্বককে শুষ্ক রাখতে নিয়মিত অ্যালোভেরার জেল দিয়ে ত্বককে মেসাজ করুন।

এই কয়েকটি উপায়ে যে কেউ অ্যালোভেরা থেকে প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলো গ্রহণ করতে পারে।

সংবেদনশীল ত্বকের যত্ন

সংবেদনশীল ত্বক বলতে আমরা সাধারণত কী বুঝি? বা সংবেদনশীল ত্বক কাকে বলে?

সংবেদনশীল ত্বক বলতে বুঝায় কেউ যদি রোদে যায় বা আবহাওয়া পরিবর্তন হয়, সামান্যতম কিছু সাধারণ ক্রিম ব্যবহার করার ফলে  ত্বক জ্বালাপোড়া আরম্ভ হয়, সামান্য বাতাসে কম আদ্রতায় ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি হয়, তাহলে তাকে সংবেদনশীল ত্বক বলে।

তাহলে সংবেদনশীল ত্বকে কীভাবে যত্ন নেওয়া যায়?

  • যেহেতু ত্বক বেশি সংবেদনশীল, তাই ত্বকে কোনো অবস্থাই সাবান ব্যবহার করা যাবে না।
  • সানক্রিম ঘন ঘন মুখে মাখবেন এবং রোদে বের হওয়ার কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট আগে সানক্রিম ব্যবহার করুন।
  • অপরিষ্কার হাতে ত্বকে হাত দেওয়া যাবে না।
  • দীর্ঘ সময় পুকুরে বা ওয়াশরোমে গোসল করা যাবে না কারণ এতে করে ত্বরেক ন্যাসেরাল ওয়েল চলে যাবে।
  • আর নারীদের ক্ষেত্রে অবশ্য অবশ্য ভারী জাতীয় মেকাপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

সংবেদনশীল ত্বকের যত্ন নিয়ে আরো অনেক পয়েন্ট আছে যা এই আর্টেকেলে ডিটেইলস বলা দুষ্কর।

চা পাতা দিয়ে ত্বকের যত্ন

গরম চা যেমন ভাবে শরীরে গরম একটা ভাব তৈরি করে তেমনি চা পাতাও ত্বকের জন্য খুব ভালো । ত্বকে যত্নে অনেক আগ থেকেই চা পাতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ত্বকে ব্যবহারের জন্য চা পাতার কিছু টিপস

  • ব্রণ কমানোর জন্য বা ভালো করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন ‍গ্রীন টি। এটি ঠান্ডা করে তুলো দিয়ে ত্বকে লাগিয়ে দিতে পারেন।
  • ত্বকের কালো চাপ দূর করার জন্য গ্রীন টি এর সাথে মধু এবং বেসন মিশ করে মুখে লাগিয়ে দিতে হবে। এবং কয়েক মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • ত্বক কোমল রাখতে ঘুমানোর আগে গ্রীন টি এর সাথে গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে।

আর এভাবেই অল্প সময়ের মধ্যে চা পাতা দিয়ে ত্বকের খুব ভালোভাবে যত্ন নেওয়া সম্ভব। এছাড়াও আছে আরো অনেক পদ্ধতি যার মাধ্যমে মুখের বা ত্বকের যত্ন নেওয়া সম্ভব।

ত্বকের যত্নে বরফ

নরম ও মসৃণ ত্বকে বরফ বেশি কার্যকারী। সেই সাথে বরফের ব্যবহারের ফলে ত্বকের অনেক ক্ষতিকর জীবানুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কিন্তু এটা সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে হবে। কীভাবে?

  • ত্বককে মসৃণ রাখার জন্য নিয়মিত বরফ ব্যবহার করতে হবে।
  • ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির জন্য বরফ দিয়ে ত্বকে মেসাজ করতে হবে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতার জন্য দিনে কয়েকবার ত্বকে বরফ দিয়ে মেসাজ করতে হবে।
  • অনেক সময় মুখমন্ডলে ফোলা একটা ‍ভাব থাকে, সেই ফোলা ভাব দূর করার জন্য বরফ ব্যবহার করুন।
  • মুখের দাগ দূর করার জন্য নিয়মিত বরফ ব্যবহার করা যেতে পারে।

এ ছিল বরফের উপকারিতা ত্বকের যত্নে। তবে আরো অনেক উপকারিতা আছে যা আজকের আর্টিকেলে উল্লেখ করা এবং ব্যাখ্যা করার সময় বা সুযোগ হয় নি।

 ত্বকের যত্নে মসুর ডাল

লাল মসুরের ডালের অনেক উপকারিতা রয়েছে ত্বকের যত্ন নেওয়াতে। তবে নিয়ম অনুযায়ী যদি কেউ নিদির্ষ্ট সময়ে এটি করতে পারে তাহরে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব।

প্রাচীনকাল থেকেই সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য মসুরির ডাল বহুল ব্যবহৃত। ত্বকের সমস্যা দূর করতে এবং রুপচর্চার একটি বিশেষ অংশ ধরে রেখেছে এই মসুরির ডাল। চলুন জানা যাক কীভাবে মসুরের ডাল আমাদের উপকৃত করে।

  • ত্বকের পুষ্টির জন্য এবং তেল মুক্ত করার জন্য অনেক উপকারী হলো মসুরের ডালের ফেইস প্যাক।
  • এছাড়াও ত্বকের ব্রণ দূর এবং ব্রণের দাগ দূর করার জন্য মসুরির ডালের ফেইসপ্যাক সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক উপাদান।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য এবং শুষ্কতা কমানোর জন্য মসুরের ডালের ফেইসপ্যাক খুবই উপকারি। এটি ব্যবহারের ফলে ত্বকে আদ্রতা বজায় তাকে যার ফলে ত্বক সহজে শুষ্ক হয় না।

কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরলাম মসুরের ডালের যা ব্যবহার করে কেউ একজন ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে বেশ ভালো ভাবেই উপকৃত হবে।

ত্বকের যত্নে দুধের সর

বর্তমানে ত্বকের যত্নে মোটামোটি সবাই সচেতন তবে কিছু কিছু মানুষ তাদের ভুল অভ্যাস বা অন্যকারণে ত্বকের ক্ষতি করে ফেলে। দুধের সরের মাধ্যমে ত্বকের উজ্জ্বলতা ভাব ফিরিয়ে আনা সম্ভব। দুধের সর ব্যবহারে র মাধ্যমে ত্বকের অনেক ‍উপকার পাওয়া যায় কেননা দুধের সরে আছে উন্নত মানের চর্বি। আর এই চর্বি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজিং হিসেবে কাজ করে।

  • ক্ষতিগ্রস্থ কোষের ক্ষয় পূরণের জন্য দুধের সর ত্বকে মালিশ করে কয়েক মিনিট  থাকতে হবে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য দুধের সরের সাথে মধু মিশিয়ে মুখে দিন। এতে করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
  • দুধের সরে আছে ল্যাকটিক এসিড এবং এই ল্যাকটিক এসিড কোষের পোড়াভাব দূর করতে সহায়তা করে।
  • দুধের সর মূখমন্ডলের বয়সের চাপ দূর করে।
  • দুধের সর ত্বকের কালো পোড়া ভাব দূর করে।

সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে, ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে দুধের সর কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং উন্নত মানের প্রাকৃতিক উপাদান।

মিশ্র ত্বকের যত্ন

মিশ্র ত্বকের জন্য যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। কিন্তু আমরা চিনবো কীভাবে কোনটা মিশ্র ত্বক?

যদি দেখেন কারো মুখের কোনো অংশ তৈলাক্ত এবং মুখের কোনো অংশ শুষ্ক, তাহলে ধরে নিবেন ঐ ত্বকটিই মিশ্র ত্বক।

এখন মিশ্র ত্বকের যত্ন আমরা বিভিন্নভাবে নিতে পারি। এর মধ্যে কয়েকটা হলো,

  • মিশ্র ত্বকে একাধিক সিরাম ব্যবহার করা উচিত নয়। কেননা মিশ্র ত্বকের একটি অংশ তৈলাক্ত এবং অপর অংশ শুষ্ক।
  • ভারী জাতীয় ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে।
  • লোমকূপ সংকোচিত করার জন্য এবং মুখে বয়সের চাপ দূর করার জন্য রাতে ত্বকে রেটিনল ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • যেহেতু মুখের এক অংশ শুষ্ক থাকে তাই আদ্র জাতীয় মাস্ক বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।

মিশ্র ত্বকের জন্য কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরলাম, যা দ্ধারা একজন মিশ্র ত্বকদারী উপকৃত হতে পারবে।

গর্ভকালীন সময়ে বা গর্ভবস্থায় ত্বকের যত্ন

গর্ভকালীন অবস্থায় একজন মা নানান রকম সমস্যার মুখামুখী হতে হয়। এমন কঠিন পরিবেশে তার রুপচর্চা করা বা ত্বকের যত্ন নেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তবে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতে এমন ক্রিটিক্যাল অবস্থায়ও ত্বকের যত্ন নিতে পারে।

  • সপ্তাহে কয়েকবার বা ১-২ বার স্ক্রাবিং করতে পারে। নিয়মিত মুখ বা ত্বক পরিষ্কার করতে হবে।
  • প্রতিদিন গোসলের পর ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করুন।
  • শরীরের বিভিন্ন অংশে ফেটে যাওয়া অংশে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
  • গর্ভকালীন সময়ে নিয়মিত হাত ও পায়ে স্ক্রাবিং করতে পারেন।
  • এছাড়া মধু ও লেবু দিয়ে মুখে লাগাতে পারে। এতে করে উজ্জ্বলতা বাড়ে।

এই কয়েকটি পয়েন্ট যদি গর্ভকালীন সময়ে কোনো মা মেনে চলে তাহলে ত্বকের সৌন্দর্য কিছুটা হলেও রক্ষা হবে।

ত্বকের যত্নে শসা

শসায় থাকা প্রাকৃতিক কোলিং পাওয়ার এবং ভিটামিন এ এবং বি, পটাশিয়াম, প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরকে তথা ত্বককে ঠান্ডা রাখে। প্রাচীনকাল থেকেই রুপচর্চায় শসা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঠিক আজকের দিনেও শসা রুপচর্চায় অন্যতম একটি সবজি। এটি দেহের জন্য যেমন উপকারী তেমনি ত্বকের জন্যও। বিভিন্নভাবে শসা ত্বকে উপকার করে,

চোখের নিচে পড়া কালো দাগ দূর করতে শসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তেমনি চোখের ক্লান্তি ভাবও দূর করে। এর জন্য আপনাকে চোখের উপর শসাকে ১০ মিনিট দিয়ে রাখতে হবে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য শসার সঙ্গে কপির গুড়া এবং মধু মিক্স করে ত্বকে দিয়ে রাখুন কয়েক মিনিট।

ব্রণ দূর করতে শসা এবং অ্যালোভেরার জেল একসাথে করে মুখে দিয়ে রাখুন।

ত্বকে টানটান ভাব আনতে শসার পেস্ট মুখে দিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এবং পরে তা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

শুষ্ক ত্বকের জন্য শসা অত্যান্ত উপকারি একটি সবজি। টক দই এর সাথে শসার পেস্ট মিক্স করে ২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন এবং হালকা গরম পানি দ্ধারা ধুয়ে ফেলুন।

Read More  কালিজিরা খাওয়ার নিয়ম

রোদে পোড়া ত্বকের দাগ দূর করতে শসার সঙ্গে লেবু এবং গোলাপজল মিক্স করে মুখে লাগিয়ে রাখুন কয়েক মিনিট।

রুপচর্চায় শসার গুরুত্ব অপরিসীম। এখানে জাস্ট কয়েকটা পয়েন্ট তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া আছে আরো অনেক পদ্ধতি। যেগুলোর মাধ্যমে ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়।

ত্বকের যত্নে ফেইসপ্যাক

ত্বকের সুরক্ষার জন্য বাজার থেকে ক্রয় করে মুখে ব্যবহার করা হয় নানা রকম ফেইসপ্যাক। এগুলোর অধিকাংশ ভেজালপূর্ণ এবং কিছু থাকে উন্নত মানের। তবে ত্বকের সুরক্ষার ক্ষেত্রে যদি জোর দেওয়া হয় তাহলে বলবো ফেইসপ্যাক ব্যবহার করার জন্য। কেননা ফেইসপ্যাক ব্যবহার যেমন নিরাপদ তেমনি সুরক্ষিত ও কার্যকারী।

  • ত্বকে দ্রুত উজ্জ্বলতা আনতে মধু, হলুদ ও দুধের ফেইসপ্যাক ব্যবহার করুন। মধু ত্বককে কোমল ও হাইড্রেট রাখে আর হলুদে আছে অ্যান্টিসেপ্টিক গুণাগুণ যা ব্রণ হওয়ার প্রবণতাকে দূর করে।
  • ত্বকের ময়লা দূর করতে মধু ও লেবুর ফেইসপ্যাক ব্যবহার করুন। এতে করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ত্বকের ময়লাও দূর হবে।
  • বয়সের চাপ দূর করতে পেঁপে ও মধুর মিশ্রণ ব্যবহার করুন।

এইভাবে বাড়িতেই তৈরি করা যায় ফেইসপ্যাক। যা ১০০% নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যসম্মত। তবে অনেকে এটাকে একটা ব্যাপোরোয়া কাজ বলে আখ্যায়িত করে।

ত্বকের যত্নে ভাত

দীর্ঘদিন ধরে ত্বকের যত্নে ভাত ব্যবহার হয়ে আসছে। বাঙ্গালির প্রিয় খাদ্য হচ্ছে ভাত। ভাত সম্পূর্ণ নিরাপদ একটি ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরিকৃত ফেইসপ্যাক যা ব্যবহারে ত্বকের অনেক উপকার হয়। কিন্তু এটা কীভাবে উপকার করে?

  • ত্বকের অস্বস্থিকর জ্বালাপোড়া এবং চুলকানি দূর করার জন্য গোসলের সময় গোসলের পানিতে কিছটা ভাতের মাড় দিলে ত্বকের এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • ব্রণের সমস্যা দূর করতে পারেন ভাতের মাড়ের মাধ্যমে। ব্রণের জায়গায় ভাতের মাড় তুলো দিয়ে দিলে ব্রণ ভালো হয়ে যায়।
  • পুড়ে যাওয়া ত্বকের জ্বালা মিঠাতে ভাতের মাড় খুব কার্যকারী। এক্ষেত্রে ক্ষত স্থানে ভাতের মাড় ব্যবহার করতে পারেন।

মূলত এগুলোই হলো ভাতের মাড়ের সুবিধা। যেগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে যেকেউ তার ত্বকের যত্ন খুব সহজেই নিতে পারে।

ত্বকের যত্নে বেসন

ত্বকের যাবতীয় পরিবর্তন এবং সুরক্ষার জন্য যুগে যুগে রুপচর্চায় বেসন ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আজকের যুগেও বেসনের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। শরীরচর্চা এবং ত্বকের সুরক্ষার জন্য ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি করা একটি বেস্ট ফেইসপ্যাক হলো বেসন।

এটি ত্বকের ত্বকের জন্য বেশ কার্যকারী।

  • ত্বকের সানট্যান পড়ারোধে ব্যবহার করতে পারেন বেসন। যদি আমাদের কাছে সানক্রিম না থাকে তাহলে বেসন ব্যবহার করতে পারি।
  • ব্রণ দূর করার জন্য বেসন, মধু এবং লেবু মিক্স ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি প্রাকৃতিক একটি ফেইসপ্যাক হিসেবে কাজ করে।
  • মেথিগুড়োর সঙ্গে বেসন এবং এর সাথে একটু পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে দিন, এতে করে ত্বকের অতিরিক্ত লোমকূপ দূর হবে।
  • ত্বকে আদ্রতা আনার জন্যও বেসন ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • ব্রণের দাগ দূর করার জন্যও বেসন এর পেস্ট ত্বকে ব্যবহার করা যেতে পারে ।

উপরোক্ত বিষয়গুলো হলো বেসন এর ব্যবহারের মধ্যে সামান্য কয়েকটি মাত্র। ত্বকের যত্নে বেসনের ব্যবহার আরো বিস্তিত।

ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল

সারাদিনের কাজের পর ত্বক যখন শুষ্ক ও কালচে হয়, তখন কারোই ভালো লাগে না। কিন্তু এই সমস্যার সমাধারন পেতে পারি ত্বকে অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের মাধ্যমে। অলিভ অয়েল তেল ত্বকের যত্নে বেশ কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।

  • ত্বক পরিষ্কার করার জন্য শীতকালে ঘুমানোর আগে অলিভ অয়েল তেল মুখমন্ডলে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে সকালে ঘুম থেকে উঠার পর ত্বক আর শুষ্ক হবে না।
  • হাত পা ফাটা থেকে বাচার জন্য অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। সকালে বা রাতে ত্বকে মেখে দিতে হবে।
  • পুরো শরীরে অলিভ অয়েল তের ব্যবহার করা যেতে পারে শরীরের যত্ন হিসেবে। কারণ এই তেল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম হিসেবে কাজ করে।
  • ঠোঁটের যত্নেও অলিভ অয়েল তের ব্যবহার করা যেতে পারে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঠোঁটে লাগাতে হবে।

সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে, শরীরের ত্বকের যত্নে অলিভ ওয়েল তের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

রোজায় ত্বকের যত্ন

রোজায় ত্বকের যত্ন

প্রতিবছর যখন দীর্ঘ এক মাসের জন্য রোজা আসে তখন কিছুটা স্বস্তির মুখ দেখে রুপচর্চাকারীরা। কেননা এ সময় রাতে দীর্ঘ সময় পাওয়া যায় এবং সেই সাথে সেহরীর সময় থেকে সকাল পর্যন্ত রুপচর্চা করা যায়। তবে অনেকের উপর পারিবারিক কাজের প্রচুর প্রেসার থাকে, যা তাদের ত্বকের যত্নে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে একটু সচেতনের মাধ্যমে ত্বকের যত্ন রোজাও নেওয়া যায়।

  • ত্বককে আদ্র রাখার জন্য রোজায় ইফতারের পর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। এতে করে শরীর শুষ্ক হবে না।
  • শরীরের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য রোজায় প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খান। এতে করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
  • ত্বকে তারুণ্য ভাবে ধরে রাখার জন্য রোজায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুণ।
  • দিনে অন্তত ২ বার ফেইসওয়াস ব্যবহার করুন ত্বক পরিষ্কার করার জন্য।
  • ভালো মানের কিছু ক্রিম ব্যবহার করুন।

এমনিতে রোজায় দিনের বেলায় অনেক কাজ এবং সেই সাথে ত্বকের যত্ন বিষয়টা যেন কল্পনার বাহিরে চলে যায়। তবে উপরের কিছু পয়েন্ট মেনে চললে ত্বকের যত্ন নেওয়া হয়ে যাবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ত্বকের যত্ন

ডায়াবেটিসের জটিলতা খুবই ভংকর এবং সেটার কারণে অধিকাংশ রোগীরাই ত্বকের যত্ন নিতে পারে না অথবা যত্ন নিতে চাইলেও সঠিকমত পারে না। ডায়াবেটিসের ফলে ত্বকেরও অনেক ক্ষতি হতে পারে। বিভিন্ন ক্ষতের মাধ্যমে শরীরের ত্বকের ক্ষতি হয়। এক্ষেত্রে করণীয় হলো,

  • ত্বকে কাটা বা ছেড়া জায়গায় প্রদাহ তৈরি হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
  • যদি দেহের কোনো জায়গা কেঁটে যায়, তাহলে সে জায়গায় প্রথমে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং এরপর অ্যান্টি বায়েটিক ক্রিম ব্যবহার করুন।
  • ত্বকের সুরক্ষার জন্য বছরে অন্তত একবার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করুন।
  • ডায়াবেটিস রোগীর ত্বক কখনো ভেজা বা বেশী আদ্র রাখা উচিত নয়।
  • প্রতিনিয়ত সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।

যেহেতু ডায়াবেটিস রোগী নানা সমস্যায় ভোগে, তাই ত্বকের যত্নে তাকে নানা দিক বিবেচনা করে নিতে হবে।

ত্বকের যত্নে আলু

ত্বকের যত্নে আলুর খুবেই উপকারি একটি সবজি। রান্না হতে শুরু করে প্রতিটা কাজেই আলুর ব্যবহার রয়েছে। একইভাবে ত্বকের যত্নেও আলুর ব্যবহার রয়েছে।

  • ত্বকের বলিরেখা দূর করার জন্য আলূর পেস্ট মুখে লাগিয়ে রাখুন ২০-৩০ মিনিট। এবং এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • কালচে ভাবে দূর করার জন্য আলূর পেস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত আলু দিয়ে মুখ মুচে ফেলুন এবং হালকা গরম পানি দিয়ে মুখে ধুয়ে ফেলুন।
  • রোদে পোড়া দাগ দূর করার জন্য টমেটোর রসের সাথে আলুর মিক্স করে ত্বকে মাখুন।

এছাড়াও আছে আরো অনেক উপকারিতা, যেগুলা আমরা আলু থেকে পেতে পারি।

ত্বকের যত্নে কমলার খোসার ব্যবহার

শীত চলে গেলে কিংবা শীতে ত্বকের যত্নের ব্যাপারে উদাসীন হওয়া মোটেও ঠিক নয়। ত্বকের যত্নে কমলা লেবুর খোসার ব্যবহার বহুকাল থেকেই। ত্বক সুরক্ষার জন্য কমলার খোসা দরকারী একটি প্রাকৃতিক উপাদান।

  • ত্বকের তৈলাক্তভাব দুর করার জন্য কমলার খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • ত্বকে উজ্জ্বলতার ভাবে আনতে কমালা লেবুর খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • কমলার খোসা এবং দুধের সর একসাথে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন, এতে করে ত্বকে বয়সের চাপ কমে যাবে।
  • গোসলের আগে কমলার খোসা মুখে ব্যবহার করুন কোষের মরা চামড়া উঠানোর জন্য।

ত্বকের যত্নে কমলা লেবুর খোসার গুরুত্ব অপরিসীম।

ত্বকের যত্নে ঘি

ত্বকের যত্নে ঘি এর ব্যবহার খুব কম দেখা যায়। তবে ব্যবহার যে হয় না, তা নয়। ঘি কিছুটা ম্যাজিকের ন্যায় কাজ করে আদ্রতা ধরে রাখতে। কিন্তু আমরা অধিকাংশই এ সম্পর্কে অবগত নয়।

  • ঘি-তে আছে ফ্যাটি এসিড। যা ত্বকে আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে বেসন, মধু ও ঘি এক সাথে মিক্স করে মুখে মাখতে হবে। এতে করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
  • ঘি-তে আছে এন্টি এজিং, যা শরীরের বলরেখা দাগ অপসারণ করতে সাহায্য করে।
  • ঠোঁটের চারপাশের কালো দাগ দূর করতেও ‍ঘি ম্যাজিকের মতো কাজ করে।

রুপচর্চায় মূলত ঘি খুবই উপকারি। আর এটা বর্তমানে বিপুল জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে।

ত্বকের যত্নে ভালো ফেসওয়াস

ত্বকের যত্নে বাজারে আছে নানা রকম ফেসওয়াস ক্রিম বা লোশন। তবে এর মধ্যে অধিকাংশগুলোই কপিকৃত। অর্থাৎ এতে রয়েছে ভেজাল। তবে যারা অনেক দিন যাবত ত্বকের যত্ন নিচ্ছেন, তারা অবশ্যই তাদের রুপচর্চার রুটিনে এমন কিছু ফেসওয়াস রাখবে না যেগুলো তাদের ত্বককে নষ্ট করে দেক বা ক্ষতি করে দেক।

সেক্ষেত্রে প্রত্যেকটা রুপচর্চা ঘরেই কিছু উন্নত মানের ফেসওয়াস থাকে । আর  এগুলো কোনো চিন্তা ভাবনা ছাড়াই যে কেউ ব্যবহার করতে পারে।

যে সমস্ত লোক দীর্ঘদিন ধরে ফেসওয়াস ব্যবহার করে আসছে তার ত্বকের যত্নে, তাদের থেকে ভালো আইডিয়া নিতে পারেন ত্বকের যত্ন সম্পর্কে।

এই ছিল আজকের আমাদের ত্বকের যত্ন নেওয়ার অনেকগুলো টিপস যা যেকেউ মেনে চরতে পারে এবং ত্বকের যত্ন নিতে পারে। তবে অবশ্যই কোনো রকম বাজারের ক্রিম ব্যবহারের আগে চিকিৎসক বা যারা আগে এ ক্রিম ব্যবহার করেছে তাদের থেকে পরামর্শ নিতে হবে।

ত্বকের যত্ন সম্পর্কে আরো জানতে দেখুন

Leave a Comment