আসসালামু আলাইকুম আজকে আমরা আলোচনা করব গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত।
মা হওয়া প্রত্যেক নারীর জন্য একটা আনন্দ মুহূর্ত, মা হওয়ার আগ মুহূর্তে মনে অনেক প্রশ্ন আসছে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে গর্ভকালীন সময়ে কি খাওয়া উচিত? মানুষের জীবনে সকল সময় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় গর্ভকালীন সময় তখন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় কি ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত তা জানলে এই সময়ের খাদ্য পরিকল্পনা আরও সহজ হয়।
পরিবারের নতুন সদস্যদের আগমনে কি ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত এবং কি কি স্বাস্থ্যকর খাবার প্রয়োজন এই টিপস গুলো জানতে আমাদের আর্টিকেল পড়তে থাকুন।
গর্ভধারণকালে সংখ্যার তালিকা কিভাবে অংশ গ্রহণ করব
একটি স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবারের তালিকা নিশ্চিত হওয়া যখন মানবদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রধান যুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার এর তালিকা থাকে।
গর্ভকালীন সময়ে আপনার নিয়মিত খাবারের তালিকায় সুষম ও পুষ্টিকর খাবার রাখা উচিত। এটি গর্ভকালীন চাহিদা সুস্পষ্ট করে আপনার গর্ভে শিশুর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত তা নিশ্চিত করা মানেই শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার একটি ধাপ।
গর্ভাবস্থায় শিশুর উপযুক্ত বেড়ে ওঠা এবং সুস্বাস্থ্য জটিলতা প্রতিরোধ একটি সুষম তালিকা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে জানা জরুরি।
গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকা কেমন হওয়া প্রয়োজন?
গর্ভকালীন সময়ে আপনার খাবারের তালিকায় একই খাবার বেশি রাখা থেকে বিরত থাকুন। আমাদের উচিত প্রতিনিয়তই আমাদের শরীরে পুষ্টিকর খাবার পরিমাণমতো পৌছে দেওয়া। এতে করে গর্ভকালীন সময়ে সকল পুষ্টিকর খাবারের চাহিদা পূরণ করার কাজটি সহজ হবে। পাশাপাশি কোন খাবারে প্রতি বিরক্ত বা অনিহা চলে আসবেনা। গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত সেটি জানা থাকলে তালিকা আরও ভারসাম্যপূর্ণ হয়।
গর্ব অবস্থায় আপনার কোন কোন খাবার অনেক বেশি রুচিশীল হতে পারে। এমন খাবারও একসাথে অনেক বেশি খেয়ে ফেলবেন না। চেষ্টা করবেন পরিমাণ মতো খাবার খেতে। কারো কারো ক্ষেত্রে গর্ভকালীন সময়ে খাবারে অনিহা দেখা নাই। আবার কখনো কখনো বমি বমি লাগে অথবা বুকে জ্বালাপোড়া করে। এমন সময়ে তিন বেলা অনেক করে খাবার না খেয়ে দিনে ছয়বার কম কম করে খাবার খেতে পারে। দিনে কয়েকবার ফল খাওয়া উপকারী, তাই গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত তা জানা দরকার।
গর্ভাবস্থায় কোন মাসে কতটুকু বেশি পরিমাণে খাবার খেতে হবে?
গর্ভধারণ করেছেন বলেই যে আপনাকে খাওয়া দাওয়া আগের থেকে অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে হবে বিষয়টি এমন নয়। গর্ভকালীন সময়ের প্রথমে দিকে সাধারণভাবে বাড়তি অনেক বেশি খাবার খাওয়া প্রয়োজন হয় না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি বেশি করে খাবার খেতে হবে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর ওজন সম্ভব বাদ দিতে হবে। গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত তা বুঝে ফল বেছে নিলে ক্যালোরি ও পুষ্টির ভারসাম্য বজায় থাকে।
গর্ব অবস্থায় কতটুকু অতিরিক্ত খাবার খেতে হবে সেটি খাবারের সাহায্য হিসেবে যায়। তবে গর্ব অবস্থায় বাড়তি খাবার বা ক্যালোরি এ ধরনের খাবার বেশি পরিমানে খেয়ে পূরণ না করে নানান ধরনের খাবার থেকে ভিটামিন নেওয়া উচিত। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ও গুণগত মানের খাবার প্রদানের চাহিদা হবে। এই সময় গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত সেটি জেনে ফল বেছে নিলে মা ও শিশু উভয়ের জন্য ভালো হয়।
এক মাস থেকে তিন মাসের গর্ভবতী খাবারের তালিকা
গর্ভকালীন সময়ে প্রথম তিন মাসে অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
আপনার খাবারের তালিকা এবং ক্যালরি চাহিদা উচ্চতা ওজন ও দৈনন্দিন শারীরিক পরিষদ পরিমাণ সহ বেশ কিছু জিনিস এর উপর নির্ভর করবে। ওজন বাট থাকলে পরিমাণের চেয়ে খাবারের তালিকা কমিয়ে আনতে হবে এবং ব্যায়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে ওজন স্বাভাবিক আনার চেষ্টা করতে হবে।
গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না
গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত তেল, চর্বি ও চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া সঠিক নয়। যেমন- ভাজাপোড়া, পরোটা, মিষ্টি কেক। এগুলোতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের অভাব থাকে। এই ধরনের খাবার বেশি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি হাটে নানান ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অতিরিক্ত বেড়ে যায়। এছাড়াও অতিরিক্ত খাবার খেলে দাঁত ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সব মিলিয়ে মা ও গর্বের শিশুর নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে নিচের তালিকা দেয়া হলো:
ক্রিম, ঘি ডালডা |
চকলেট, মাখন |
ভাজাপোড়া |
চিপস |
বিস্কুট |
কেক |
আইসক্রিম |
পুডিং |
কোমল পানি – যেমন কোলা |
এছাড়া এগুলো সাধারণভাবে ক্যালোরি বহুল হয়। এমনও হতে পারে প্রয়োজনে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে, পাশাপাশি ওজন বেড়ে গিয়ে গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিসহ আপনার গর্ভে শিশুর স্বাস্থ্যের নানান জটিলতা ও মারাত্মক ব্যাধি সৃষ্টি হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় এই ধরনের খাবার প্রয়োজন নয়, ঠিক ততটুকুই খাবেন। এই খাবারগুলোর পরিবর্তে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ ফল বেছে নিন। এজন্য গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত তা জানা জরুরি।
সেই সাথে খাবার এর তালিকায় কিছু পরিমাণে স্বাস্থ্যকর তেল যুক্ত খাবার রাখবেন। যেমন ভিন্ন ধরনের বাদাম ও ইলিশ, পুঁটি ও চাপিলার মত তৈলাক্ত মাছ।
এ সময়ে কিছু কিছু খাবার পুরোপুরি ভাবে খাওয়ার বদ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। কেননা এসব খাবারে আপনার গর্বের শিশুর ক্ষতি হতে পারে যেমন:
– গরু, ছাগল ও ভেড়ার অপাস্তুরিত দুধ
– অপাস্তুরিত দুধ দিয়েই তৈরি সব ধরনের খাবার
– কাঁচা অথবা ভালোভাবে সিদ্ধ না হওয়া মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ
– কাঁচা অথবা অর্ধ সিদ্ধ সামুদ্রিক মাছ দিয়ে তৈরি খাবার
– ভালোভাবে সিদ্ধ না হওয়া ফ্রজেন প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংস
– অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয়
– মদ বা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়
– আপনার এলার্জি হয় এমন কোন খাবার
– হারবাল বা ভেষজ ওষুধ
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত
ফলগুলোর তালিকা নিচে দেওয়া হল:
– কমলা
– আপেল
– কলা
– পেয়ারা
– কিউই
– অ্যাভোক্যাডো
কমলা: অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল কমলালেবু। এই ফল গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত এই প্রশ্নের উত্তরে অন্যতম। কমলাতে রয়েছে অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি। এই ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আয়রন শোষণের সাহায্য করে। গর্ভবতী মায়ের খাদ্য হিসেবে কমলা উপকারী। এজন্য নিয়মিত কমলা খেলে রক্তস্বল্পতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ফাইবার আর ফলিক অ্যাসিডের অন্যতম উৎস হলো কমলা। সন্তান গঠনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ— যেমন ভ্রণের মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের বিকাশে এটি সহায়ক। তাই গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত সেটি জানলে কমলা, কিউই, পেয়ারা প্রভৃতি ফলকে অগ্রাধিকার দেওয়া সহজ হয়।
উপসংহার
গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে নানা ধরণের পরিবর্তন আসে এবং এই সময়ে সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করাই শিশুর সুস্থ বিকাশের মূল চাবিকাঠি। তাই গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত—এ প্রশ্নের উত্তর জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমলা, আপেল, কলা, পেয়ারা, কিউই ও অ্যাভোক্যাডোর মতো পুষ্টিকর ফলগুলো মায়ের শরীরকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল সরবরাহ করে। পাশাপাশি এগুলো গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক, হাড় ও প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে এবং নবজাতকের সুস্থ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই উপকারী ফলগুলো অন্তর্ভুক্ত করুন। মনে রাখবেন, গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত তা জানা ও সে অনুযায়ী খাওয়া আপনার এবং আপনার সন্তানের জন্য একটি সুন্দর শুরু।