মানুষের শরীরে খারাপ ও ভালো দুই ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। কিন্তু খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। ফলে ধীরে ধীরে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেতে হয়। তবে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের কার্যকরী প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহারে সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, আপনার দৈনন্দিন ডায়েট ভালো স্বাস্থ্যের লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উচ্চমাত্রার খারাপ রক্তচাপ কমাতে যেসব খাবার কাজে লাগাতে পারেন চলুন জেনে আসি এসব খাবার সম্পর্কে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের কার্যকরী প্রাকৃতিক উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাক।
রসুন: (garlic)
রসুন রান্নাঘরেই পাবেন । রসুনের স্বাস্থ্যকর গুণাগুণ অনেকের জানা। রসুনে আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন, খনিজ ও অর্গানোসালফার যৌগ। এই যৌগ ঔষধি গুণ হিসেবে কাজ করে। বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে বাজে কোলেস্টেরল কমাতে কার্যকর রসুন।
এটি রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর রসুন দৈনিক অর্ধেক বা এক কোয়া করে খেলে কোলস্টেরলের মাত্রা ৯ শতাংশ কমতে দেখা যায়।আধুনিক প্রজন্মের মানুষের জন্য, এটি কোলেস্টেরল হ্রাস করার একটি দুর্দান্ত উপায়।
সকালে বা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এটি কাঁচা খেতে হবে। আসলে, এতে অ্যালিসন উপস্থিত রয়েছে, যা মোট এলডিএল কোলেস্টেরলের পরিমাণ হ্রাস করতে সক্ষম।
ধনে: (Coriander)
এলডিএল নামক একধরনের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে আমাদের দেহে , যা শিরা-উপশিরার মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচলে সমস্যা বাড়ায়। এর কারণে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় ধনে । আবার ধনে শরীরের জন্য ভালো এইচডিএলর মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে শরীর সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে এই ।
আমলকি: (Amalaki)
আমলকী টক আর তেতো স্বাদে ভরা গুণে-মানে অতুলনীয় একটি ফল। শুধু ভিটামিন আর খনিজ উপাদানেই ভরপুর নয়, বিভিন্ন রোগব্যাধি দূর করতে ও অসাধারণ গুণ রয়েছে আমলকীর। আসলে আমলকীর ভিতরে আমলা এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান পাওয়া যায় যা কোলেস্টেরল কমাতে কাজ করে। আপনি যদি কাঁচা খান, বা এক চামচ আমলকীর গুঁড়ো হালকা গরম জলের সঙ্গে পান করেন তবে এটি আপনার হার্টের সমস্যা থেকে রক্ষা করবে।
আপেল সিডার ভিনিগার: (Apple cider vinegar)
কোলেস্টেরল-সহ অনেক সমস্যার সমাধান করতে সক্ষমআপেল সিডার ভিনিগার । এক চামচ আপেল ভিনিগার নিয়ে এক গ্লাস কুসুম গরম জলে ভালো করে মিশিয়ে পান করুন। এটি আপনার কোলেস্টেরলের সমস্যাও সমাধান করবে এবং আপনি সুস্থও থাকবেন।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: (ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার)
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে দ্রবণীয় ফাইবার জাতীয় খাবার খেলে । আর আপনার অন্ত্রে বসবাসকারী উপকারী ব্যাকটেরিয়া দ্রবণীয় ফাইবার হজম করতে পারে। আসলে এটি সেই ব্যাকটেরিয়ার নিজস্ব পুষ্টির জন্যও প্রয়োজন। আর এসব ভালো ব্যাকটেরিয়া বা প্রোবায়োটিক ক্ষতিকারক ধরনের লিপোপ্রোটিন ও এলডিএলের মাত্রা কমায়।
ব্যায়াম: (exercise)
ব্যায়াম হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করে। এটি শুধু শারীরিক সুস্থতাই উন্নত করে না; বরং স্থূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে ।নিয়মিত ব্যায়াম ক্ষতিকারক এলডিএল কমায় এবং উপকারী এইচডিএল বাড়াতেও উপকারী হিসেবে কাজ করে ।
ধূমপান এড়ানো: (Avoid smoking)
বিভিন্ন উপায়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় ধূমপান। এ ছাড়াও এটি শরীরে কোলেস্টেরল পরিচালনা করে তা পরিবর্তন করে। তাইধূমপান এড়াতে হবে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে চাইলে ।
ওজন কমানো: (lose weight)
ডায়েটিং আপনার শরীর থেকে কোলেস্টেরল শোষণ করে। ৯০ জন প্রাপ্তবয়স্কের উপর দুই বছরের গবেষণায় দেখা গেছে যে, কোনো কোনো ডায়েটে ওজন কমানোর খাদ্য কোলেস্টেরল শোষণকে বাড়িয়েছে এবং শরীরে নতুন কোলেস্টেরল তৈরিও কমিয়েছে।