সাধারণত প্রাইমারি লেভেল থেকেই জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন পত্র লিখা শিখতে হয়। কেননা এই সময়েই ( পঞ্চম শ্রেণি হতে ইন্টার বা হাইয়ার লেভেল ) শিক্ষার্থীদেরকে যাচাই করার জন্য এবং স্কিলফুল করার জন্য শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষায় উক্ত আবেদনপত্র দিয়ে থাকে। তাই সামগ্রিকভাবে চিন্তা করলে জরিমানা মওকুফের জন্য প্রধান শিক্ষকের নিকট আবেদন সম্পর্কে একজন শিক্ষার্থীর জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আজকের আর্টিকেলে বাংলাটিপ ওয়েবসাইট থেকে আমরা শিখবো কিভাবে জরিমানা মওকুফের জন্য একজন শিক্ষার্থী তাঁর শিক্ষকের নিকট সঠিকভাবে আবেদন করবে সে সম্পর্কে। ( আরো জানুন বিদ্যালয় ছাড়পত্র লিখার নিয়ম ও বেতন মওকুফের জন্য আবেদন সম্পর্কে )
সাধারণত পারিপার্শ্বিক সহ নানা কারণে একজন শিক্ষার্থীর বেতন দিতে কিছুটা বিলম্ব হতেই পারে। আর এটাই হলো স্বাভাবিক একটি নিয়ম। কিন্তু সে বিধায় আমাদের দেশে অবস্থিত অনেক বিদ্যালয় রয়েছে, যেগুলোতে জরিমানা করে থাকে। নির্দিষ্ট সময়ে বেতন না দিতে পারলে সেই সময় থেকে জরিমানা শুরু হয়। আর শিক্ষার্থীদের মাঝে অনেকে থাকে, যাদের সময় মতো প্রতিমাসে বেতন পরিশোধ করার সামর্থ্য আর্থিকভাবে থাকে না। আর যখনই বিদ্যালয়ের বেতন নির্দিষ্ট সময়ে দিতে অসমর্থ হয়, তখনই প্রধান শিক্ষক হতে নির্দেশিত আইনে শিক্ষার্থীদের উপর জরিমানার চাপিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু যদি কোনো শিক্ষার্থী তাঁর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট যথা নিয়মে এবং যুক্তিগত কারণ ব্যাখ্যা করতে পারে আবেদনপত্রের মাধ্যমে যে কেন সে এই মাসে বা গত মাসে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেতন দিতে পারে নি, তাহলে প্রধান শিক্ষক সেই ছাত্রের উপর থেকে জরিমানা মওকুফ করে দিতে পারে। এখন কিভাবে একজন ছাত্র তার শিক্ষকের নিকট জরিমানা মওকুফ চেয়ে আবদেন করবে সে সম্পর্কে অনেকে জানে না। আর তাদের উদ্দেশ্যেই আজকের আমাদের এই আর্টিকেল। তাহলে বিলম্ব না করে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন করার নিয়ম
মনে কর সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ের বেতন দিতে না পারায় প্রধান শিক্ষক কর্তৃক তোমার জরিমানা হয়েছে। এখন জরিমানা মওকুফের জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে আবেদন লিখ: জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন করার নিয়ম হলো –
২৫.১১.২০২১
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
কাদুটি উচ্চ বিদ্যালয়
কুমিল্লা, চান্দিনা, কাদুটি
বিষয়: জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন।
জনাব,
সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, আমি আপনার বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের একজন নিয়মিত ছাত্র। আমি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে আপনার বিদ্যালয়ে সকল নিয়ম-কানুন মান্য করে লেখা-পড়া করে আসছি এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বেতন পরিশোধ করে আসছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো গত মাসে আমি বিদ্যালয়ের বেতন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হই। নানা রকম আর্থিক সংকটের কারণে আমার বাবা গত মাসে টাকা পাঠাতে পারে নি। ফলে আমিও বিদ্যালয়ের বেতন দিতে পারি নি। কিন্তু বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সঠিক সময়ের মধ্যে যদি কোনো শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের বেতন দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে নির্দিষ্ট পরিমাণ জরিমানা তাঁর উপর ধার্য করা হয়। ঠিক একইভাবে আমার উপরও তেমনটি হয়েছে। কিন্তু আজকে আমি আমার বেতন পরিশোধ করতে চাই, তবে আমার পক্ষে জরিমানা সহ বেতন পরিশোধ করা প্রায় অসম্ভব। তাই প্রধান শিক্ষকের নিকট আমার আকুল আবেদন যে, গত মাসের বেতন দিতে ব্যর্থ হওয়ার আমার উপর আরোপিত জরিমানা মওকুফ করে বেতন পরিশোধের সুযোগ তৈরি করে দিয়ে বাধিত করিবেন।
অতএব বিনীত নিবেদন এই যে, যদি প্রধান শিক্ষক তাঁর সহৃদয়ে বিবেচনার মাধ্যমে জরিমানা মওকুফ করে আমাকে বেতন পরিশোধের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হয়, তাহলে আপনার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকিব।
নিবেদক,
আপনার বিদ্যালয়ের বাধ্যগত ছাত্র
ইকরামুল হক
দশম শ্রেণি, রোলনং- ০৫
উপরোক্ত আবেদন পত্রটিই হলো জরিমানা মওকুফ করে প্রধান শিক্ষকের নিকট আবেদন করার ফরম্যাট। যদি কোনো শিক্ষার্থী উক্ত আবেদনটি শিখে তাহলে সে যেমন পরীক্ষায় উপকৃত হবে একইভাবে বাস্তবিক জীবনেও প্রধান শিক্ষকের নিকট জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন করতে পারবে।
জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন নিয়ে শেষ কথা
যেহেতু আজকের আর্টিকেলটি ছিল জরিমানা মওকুফের জন্য প্রধান শিক্ষকের নিকট আবেদন, ঠিক একইভাবে পুরো আর্টিকেল জুড়ে এই বিষয়েই আলোচনা করা হয়েছে। যদি কোনো শিক্ষার্থী তাঁর বিদ্যালয়ে উক্ত পরিস্থিতিতে পতিত হয়ে থাকেন, তাহলে উপরোক্ত ফরম্যাটে আবেদন লিখে প্রধান শিক্ষকের নিকট আবেদন করতে পারেন। আবার একইভাবে যদি কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য আবেদনপত্র লিখার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে চায়, তাহলে সেও এই আর্টিকেলের আবেদনপত্রটির ফরম্যাটে শিখতে পারে। মূলত আজকের আর্টিকেলটি দ্ধারা দুই ধরনের শিক্ষার্থী উপকৃত হবে। আমাদের মধ্যে যারা যারা নানা দিক থেকে আর্থিকভাবে সংকোটে রয়েছি এবং সময়ে সময়ে বিদ্যালয়ের বেতন দিতে ব্যর্থ হচ্ছি এবং বিদ্যালয় কর্তৃক জরিমানাকৃত হচ্ছি, তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি বেশ উপকারক হবে। সার্বিকভাবে বলা চলে যে, জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন নামক আর্টিকেলটি দ্ধারা শিক্ষার্থীরা বেশ ভালোভাবে উপকৃত হয়েছে।