নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র – নতুন ভোটারের জন্য কি কি লাগবে

আলোচনা করব নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে। এনআইডি কার্ড বা ভোটার আইডি কার্ড হল একটা দেশের জনগণের পরিচয়ের বাহক। কে কোন দেশের নাগরিক তার পরিচয় বহন করে ভোটার আইডি কার্ড। আর এন আই ডি কার্ডে বা ভোটার আইডি কার্ডে যদি ভুল তথ্য থাকে বা কোনো ধরনের ভুল থাকে তাহলে তা আপনার বিভিন্ন ধরনের  সমস্যার কারণ  হয়ে দাঁড়াবে। আর এর অন্যতম একটা কারণ হলো নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র  সম্পর্কে জ্ঞান না থাকে। ভোটার আইডি কার্ডের যে সকল সমস্যা হয় তার মধ্যে একটা কমন সমস্যা হলো যে কোন নামের বানান এলোমেলো থাকা বা ভুল থাকা। 

আর এই ভুল থাকার কারণে আমাদের বিভিন্ন কর্ম ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এবং এই ভুল সংশোধন করার জন্য পরবর্তীতে আমাদের অনেক পরিশ্রম, সময়, অর্থ  দিতে হয়। তুন ভোটার হওয়ার জন্য আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেনা যে নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি সে সম্পর্কে। অনেক সময় ভুল  কাগজপত্র দেয়ার মাধ্যমে আমাদের এনআইডি কার্ড বা ভোটার কার্ড আসে না অথবা ভুল তথ্য সংযোজন করা হয়। তার অন্যতম একটা কারণ হচ্ছে আপনার  কাগজপত্রের ভুল তথ্য থাকে। তো আসুন এখন জেনে নেয়া যাক নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে।  নিচে নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

ভোটার হওয়ার প্রথম প্রক্রিয়া

আমাদের দেশের সাধারণত তিন বছর পর পর নতুন ভোটার নিবন্ধন করা হয়। এবং নির্বাচন কমিশনের লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই তালিকা গুলো করে থাকেন। যারা বাদ পড়েন তারা অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে নতুন নতুন ভোটার হতে পারেন। ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়ায় একটা চলমান প্রক্রিয়া। আমাদের দেশে নতুন ভোটার হতে হলে ১৮ বছর বয়স লাগে।তাই আমাদের ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে ভোটার নিবন্ধনের জন্য বা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করা জরুরী। কেননা সময় মত আপনি যদি ভোটার হতে না পারেন তাহলে পরবর্তীতে আপনাকে অনেক হয়রানির শিকার হতে হবে এবং অনেক অফিসার কর্মকাণ্ডের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আর যারা অনলাইনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করবেন অথবা নির্বাচন কমিশনে হতে প্রেরিত লোককেদের কাছে ভোটার হওয়ার জন্য নিবন্ধন করে তাদের যদি ১৮ বছর পূর্ণ না হয়। তাহলে তারা ভোটার হলেও তাদের নাম ভোটার তালিকায় যুক্ত করা হবে না। পরবর্তীতে বয়স হলে তাদের ভোটার আইডি কার্ড প্রদান করা হবে।

Read More  বিয়ের মেহেদি ডিজাইন ( Wedding Mehndi Design )

নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহ

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন হতে নাগরিকদের যে পরিচয় সনদ প্রদান করে থাকে তাকে সংক্ষেপে nid card বা ভোটার কার্ড বলা হয়। এবং জাতীয় পরিচয় ও পত্র বলা হয়ে থাকে। আর এই ভোটার আইডি কার্ড প্রতিটা নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা সনদ। এবং এই নির্বাচন কমিশন নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র  কি কি লাগবে সে সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে থাকে। তাহলে নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্ক সেই তথ্যগুলো জেনে নেয়া যায়। 

  • সর্বপ্রথম একটা আবেদন ফরম লাগবে। আবেদন ফরমটি পূরণের পর আপনাকে অনলাইন থেকে একটা পিডিএফ ফাইল দিবে। 
  • নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহের মধ্যে দ্বিতীয়তে – প্রয়োজন হবে সেটা হচ্ছে জন্ম সনদ। আর জন্ম সনদ যদি আপনার না থেকে থাকে তাহলে অনলাইন থেকে সেটা গ্রহণ করতে হবে।
  • নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহের মধ্যে তৃতীয়তে – যেটা প্রয়োজন হবে সেটা হলো আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র। যাকে আমরা সহজে সার্টিফিকেট নামে চিনে থাকি। এবং সে সার্টিফিকেট যে কোন শ্রেণীর হলেই চলবে। তবে সর্বশেষ যে সার্টিফিকেট প্রাপ্তি হয়েছেন সেই সার্টিফিকেটটা দিবেন।
  • নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহের মধ্যে চতুর্থ তে – যেটা প্রয়োজন হবে সেটা হলো নাগরিক সনদপত্র। আপনি যদি গ্রামে থেকে থাকেন তাহলে আপনি আপনার ইউনিয়ন পরিষদের কাছ থেকে নাগরিক সনদপত্রটি গ্রহণ করবেন। এবং আপনি যদি শহরে থেকে থাকেন তাহলে আপনার উপজেলা থেকে নাগরিক সনদপত্র গ্রহণ করবে। 
  • পিতা মাতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটো কফি।
  • নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহের মধ্যে ষষ্ঠ তে – যেটা প্রয়োজন পড়বে সেটা হলো আপনার কাবিনামা। তবে আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন তাহলে কাবিননামা দিবেন আর যদি বিবাহিত না হয়ে থাকেন তাহলে প্রয়োজন নেই। 
  • নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহের মধ্যে  সপ্তম তে – যেটা প্রয়োজন পড়বে সেটা হলো। আপনি যদি পুরুষ হন এবং বিবাহিত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার তাহলে আপনার স্ত্রীর এনআইডি কার্ডের ফটোকপি লাগবে। আর আপনি যদি মহিলায় থাকেন তাহলে আপনার স্বামীর এনআইডি কার্ডের  ফটোকপি লাগবে।আপনি যদি বিবাহ না করে থাকেন তাহলে বিয়ে কোন চিন্তা করার প্রয়োজন নেই।
  • নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহের মধ্যে অষ্টম তম – যেটা লাগবে সেটা হচ্ছে আপনার রক্তের গ্রুপ। যদি আপনি আপনার রক্তের গ্রুপ না জেনে থাকেন তাহলে কোন হাসপাতাল থেকে সেটা পরীক্ষা করে জেনে নিন।
  • নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহের মধ্যে  নবমতম – যেটা লাগবে সেটা হচ্ছে প্রত্যয়ন পত্র। সেটা আপনি আপনার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা কাউন্সিলর কাছ থেকে অথবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে নিতে পারেন। 
  • নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহের মধ্যে  দশম তম – যেটা প্রয়োজন পড়বে সেটা হয়েছে একটা ইউটিলিটি বিলের কপি। আর ইউটিউব হচ্ছে, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, অথবা পানি বিল  এদের যেকোনো একটা দিলে হবে। 
  • অঙ্গীকারনামা। এবং সেই অঙ্গীকারনামায় আপনাকে উল্লেখ্য করতে হবে, আপনি ইতিপূর্বে কোন NID কার্ড গ্রহণ করছেন কি না। অনেক অসাধু লোক আছে যারা বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে বা অসাধু উপায়ে একাধিকবার ভোটার আইডি কার্ড গ্রহণ করে থাকে। 
Read More  কালিজিরা খাওয়ার নিয়ম

এখন যেগুলো লাগবে সেগুলো হলো আপনার প্রয়োজন সাপেক্ষে। 

যদি আপনার থাকে তাহলে দিতে পারেন অথবা যদি প্রয়োজন হয় তাহলে দিতে পারেন। সেগুলো হলো আপনার যদি কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে থাকে তাহলে সে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর একটা ফটোকপি, প্রতিবন্ধী হয়ে থাকলে প্রতিবন্ধীর সনদের ফটোকপি, আপনি যদি প্রবাসী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পাসপোর্ট এর একটা  ফটোকপি। তো সংযোজন করে দিতে পারেন তাহলে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের জন্য যে আবেদন সেটা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকবে। 

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কিছু নিয়ম  

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হতে হবে। তবে আপনি দুই পদ্ধতিতে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন করতে পারবেন। একটা সরাসরি অপরটা হল অনলাইনের মাধ্যমে। সরাসরি যেভাবে করবেন সেটা হল নির্বাচন কমিশনার হতে প্রেরিত লোকদের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। সরাসরি এই পদ্ধতিতে সাধারণত প্রতি ৩  বছর পর পর নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের মধ্য হয়ে থাকে।

 আর আপনি যদি অনলাইনে মাধ্যমে আবেদন করতে চান বা নিবন্ধন করতে চান তাহলে আপনি যে কোন সময় সেটা করতে পারবেন। তার জন্য যে  কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন পড়বে সেগুলো আমরা উপরে উল্লেখিত করেছি।

ভোটার আইডি কার্ড বা এনআইডি কার্ড গ্রহণের নিয়ম

আপনার ভোটার আইডি কার্ড বা এনআইডি কার্ড যখন প্রস্তুত হয়ে যাবে। তখন আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে। অথবা আপনি সেই কার্ডটি আপনার ইউনিয়ন পরিষদ হতে বা এসএমএস এর উল্লেখিত নির্দিষ্ট স্থান হতে গ্রহণ করতে পারবেন।

পরিশেষে

উপরের আলোচনার মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড বা এনআইডি কার্ড বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড সম্পর্কে একটা পরিপূর্ণ এবং সঠিক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলোর মাধ্যমে আপনি সহজেই এনআইটি কার্ড বা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে সব সময় সঠিক তথ্য দিবেন। তা না হলে পরবর্তীতে আপনাকে হয়রানি স্বীকার হতে হবে। অতএব আশা করি  উপরে আলোচনার মাধ্যমে নতুন ভোটারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহ ছাড়া ও আরো অন্যান্য বিষয়ে জানতে পেরেছেন।

Read More  ড্রাগন ফলের ১২টি উপকারিতা | ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি

Leave a Comment