শারীরিক উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে বাদামের বিকল্প অন্য খাবার খুব কমই আছে। আমাদের স্বাস্থ্য চাহিদার অধিকাংশ প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো বাদামে বিদ্যমান। আমাদের দৈহিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য বাদামে রয়েছে ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, পটাশিয়াম, ফাইবার, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ওমেগা থ্রি-ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ইত্যাদি প্রয়োজনীয় উপাদান। এগুলো আমাদের শরীরের প্রতিদিনের দরকারী চাহিদাগুলো সম্পূর্ণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও বাদামে আছে প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ। দেহেকে সুস্থ্য রাখতে বাদামের উপকারিতা অপরিহার্য।
যদিও অবসর সময়ে বাদাম খাওয়াটা অনেকের পছন্দের তবে সব কিছুরেই কিছু না কিছু অপকারিতা থাকেই । তেমনি বাদামও তার বাহিরে নয়। অর্থাৎ বাদামের উপকারিতা র পাশাপাশি নাম-মাত্র অপকারিতাও রয়েছে।
সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে একজন ব্যক্তির প্রতিদন নির্দিষ্ট পরিমাণ বাদাম আহারণ করা উচিত। বাদামের মধ্যে কিছু অ্যান্টি ডিজেস উপাদান থাকে যা শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগকে দেহে থেকে দূরে রাখে এবং সেই সাথে দেহ ও মনকে চাঙ্গা রাখে।
যুক্তরাষ্ট্রের উইট্যাহ বিশ্ববিদ্যালয়, রোভিরা আই ভার্জিল ইউনিভার্সিটি ও স্পেনের পেরি ভার্জিল হেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা বাদাম নিয়ে গবেষণা চালান, গবেষকরা বলেছেন, একজন স্বাস্থ্যবান পুরুষের জন্য বাদাম খুবই উপকারী। এরা একজন ব্যক্তির শারীরিক আঙ্ক্ষার সাথে বাদামের বিশেষ একটি সম্পর্ক আবিষ্কার করেছেন। তারা আরোও জানান, বাদামে আছে প্রচুর পরিমাণ লেবিডো যা একজন পুরুষ ও মহিলার শারীরিক সুস্থ্যতার জন্য অত্যবশ্যক।
বাদামের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক বাদামের প্রকারভেদ সম্পর্কে।
বাদামের প্রকারভেদ বা জাত
বাদাম কত প্রকার বা জাতের?
আমরা যেহেতু অধিকাংশ সবাই বাংলাদেশে বসবাসকারী সেহেতু আলোচনা সুবিধার্থে আমাদের হাতের নাগালে উপস্থিত বাদামগুলোকেই নেওয়া যাক। বাংলাদেশের জলবায়ু ও আবহাওয়া এবং উৎপাদন অনুযায়ী বাদাম সাধারণ ৫ প্রকার।
- চিনাবাদাম
- কাজুবাদাম
- আমন্ড
- পেস্তাবাদাম
- আখরোট
উপরোক্ত বাদামগুলোই মূলত আমাদের দেশে বেশি পরিচিত। তবে সর্বাদিক ভাবে বাংলাদেশে বেশি পরিচিত বাদাম হলো চিনাবাদাম এবং কাজুবাদাম
বাদামের পুষ্টিগুণ
উল্লেখিত প্রায় সকল বাদামেই উপরে ব্যাখ্যাকৃত সকল পুষ্টিগুণাগুণ গুলোই আছে। তবে কমন কয়েকটি পুষ্টিগুণ সব প্রকার বাদামেই রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো ভিটামিন-ই, ভিটামিন-সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, মিনারেল ইত্যাদি।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণে আছে প্রোটিন, সম্পৃক্ত চর্বি, পলিউনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি। আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে বাদামের পুষ্টিগুণের একটি চার্ট চিত্র দেওয়া হলো-
নিয়মিত বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
বাদামে রক্ষিত উপাদান এবং এগুলোর সম্পর্কে মোটামোটি সংক্ষিপ্ত ধারণা পাওয়া গেল, চলুন এবার জানা যাক নিয়মিত বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। বাদাম আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীকে চাঙ্গা রাখতে এবং সুঠম দেহ গঠনে নিয়মিত বাদাম খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে। শরীরকে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই থেকে রক্ষা করতেও বাদাম আমাদের সহায়তা করে। চলুন দেখি বাদামের উপকারিতাগুলো।
বাদামের উপকারিতাগুলো
- পুষ্টির ঘাটতি দূর করে
- ক্যান্সার হতে রক্ষা করে
- ক্লান্তি দূর করে
- মেজাজ ভালো রাখে
- শরীরে মেদ কমায়
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
- ব্রেনের শক্তি বৃদ্ধি করে
- হাড় ও দাঁত মজবুত করে
- রোগ প্রতিরোত ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
- কোমরের ব্যথা দূর করতে বাদাম
- দৈহিক ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখে
- রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে
- স্কিন কোষের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
উপরোক্ত বাদামের উপকারিতাগুলো একজন ব্যক্তি পেতে পারে বাদাম খাওয়ার মাধ্যমে। উল্লেখিত বিষয়গুলো আলোচনার পরই বাদামের অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
বাদাম পুষ্টির ঘাটতি দূর করে
মানব দেহেরে পুষ্টি ঘাটতি দূর করার জন্য প্রয়োজন ফাইবার, পরিমাণমতো প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন-ই/বি ইত্যাদি। আর বাদামে প্রাকৃতিকভাবেই উক্ত প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো নির্দিষ্ট পরিমাণ মতো আছে।
বাদামে আছে ৩.৫ গ্রাম ফাইবার, ৬গ্রাম প্রোটিন, ৬ গ্রাম ফ্যাটি অ্যাসিড। মূলত, বাদামে বিদ্যমান উপাদানগুলো শরীরের অনেক রকম ক্ষতিকর ছোট-খাটো রোগকে দূরে রাখে। যেহেতু বাদামে প্রচুর পরিমাণ চর্বি থাকে না, তাই বাদাম খেলে অতিরিক্ত ওজন বাড়ার সম্ভাবনা নেই। বরং বাদাম শরীরের পুষ্টির ঘাটতি দূর করে।
ক্যান্সার হতে রক্ষা করে
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সাধারণত আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে কোষের ক্ষতিকে হ্রাস করে। ক্যান্সারের মূল কারণই হলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে কোষ বৃদ্ধি পাওয়া। ফলাফল সরুপ ক্যান্সার হয়। সেক্ষেত্রে বাদামে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। সুতরাং বাদাম আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়া থেকে সুরক্ষা রাখে।
বাদাম হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
দেহ কে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রতিনিয়ত কাজু বাদাম খেতে হবে। প্রতিদিন যদি কেউ ভেজানো
কাজু বাদাম বক্ষণ করে, তাহলে তার অন্ত্রে কিছু স্পেসিপিক এনজাইমের নিঃস্বরণ ঘটৈ, যা হজমে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ, কাজু বাদাম হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
দৈহিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাদামের ভূমিকা
ভাত বেশি খেলে কী হয়? ভাতে আছে প্রচুর পরিমাণ শর্করা। আর এ শর্করা আমাদের ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। অর্থাৎ আমরা যতো বেশি ভাত বা শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণ করবো, আমাদের ওজন বৃদ্ধির পাওয়ার সম্ভাবনা ততো বৃদ্ধি পাবে। প্রতিদিন বাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের অনেকটা ক্ষিধে কমে যাওয়ায় পরোক্ষভাবে বাদাম ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপকার করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাদাম
আমাদের দেহে ম্যাগনেসিয়ম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিজ্ঞানীরা একাধিকবার গবেষণা করে দেখেছেন, ম্যাগনেসিয়াম এর ঘাটতির কারণে ছোট কিংবা বড় সবারই রক্তচাপের তারতাম্য হতে পারে। আর ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে সৃষ্টি হওয়া এই রক্তচাপের ফলে তৈরি হয় নানা রকম দৈহিক সমস্যা। দীর্ঘদিন রক্তচাপের কারণে হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ডেমেজ, ব্রেইন স্টোক ইত্যাদির মতো মারাত্মক রোগ হতে পারে এবং মৃত্যুও হতে পারে।
কিন্তু বাদামে আছে উপযুক্ত পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম। সুতরাং এখন বুঝাই যাচ্ছে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাদামের ভূমিকা অনিস্বীকার্য।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বাদাম
বাদামে আছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান এবং সেই সাথে আছে ম্যাগনেসিয়াম। বাদামের মধ্য বিদ্যমান উক্ত উপাদানগুলো আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেমের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে যে, বাদাম আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অতীব প্রয়োজন।
বাদাম কোলেস্টেরলের মাত্রা হৃাস করে
হার্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি হলো ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্র অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পাওয়া। আর এ অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে হার্ট দূর্বল সহ নানা রকম হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। তাই প্রতিনিয়ত আমাদের উচিত কোনো ভাবেই যাতে আমাদের শরীরে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা না বাড়ে সে দিকে লক্ষ্য রাখা। এমতোবস্থায় আমাদের করণীয় কী? আমাদের করণীয় হচ্ছে প্রতিদিন কিছুটা বাদাম খাওয়া। কেননা বাদামের মধ্যে থাকা একটি বিশেষ উপাদান আমাদের দেহের মধ্যে উৎপন্ন হওয়া এই ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এর মাত্র নিয়ন্ত্রণ করে।
রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে বাদাম
সাধারণত ম্যাগনেসিয়াম নামক উপাদান আমাদের শরীরের রক্তে থাকা শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু বাদামে আছে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম। সুতরাং বাদাম খাওয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের দেহে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারি এবং তা আমাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। সুতরাং সুস্থ্য দেহ গঠনে প্রতিদিন বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
বাদাম ব্রেইনের শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে
গ্রাম-অঞ্চলে পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের বেশি করে বাদাম খাওয়ানোর জন্য বেশি পরিমাণ বাদাম দেওয়া হতো। বাদামে আছে কগনিটিভ পাওয়ার। আর এই কগনিটিভ পাওয়ার আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা এবং চিন্তা শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলাফল সরুপ, বাদাম ব্রেইনের শক্তি এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
বাদাম হাড় ও দাঁত মজবুত করে
বাদামে আছে প্রচুর পরিমাণ ফসফরাস। আর আমরা জানি, শরীরের মধ্যে থাকা একমাত্র উপাদান হলো ফসফরাস, যা দেহের হাড়ের গঠন, শক্ত ও মজবুত করতে ভূমিকা রাখে এবং দাঁতকে করে আরো মজবুত। যদি কেউ প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ বাদাম গ্রহণ করে, তাহলে তার দেহের হাড় আগের চেয়ে অনেকগুণ পরিমাণ শক্তিশালী হবে এবং হাড়ের বিভিন্ন রকম রোগ হতে রেহাই পাবে।
স্ক্রিন কোষের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
বাদামে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পদার্থ দেহে অনেকগুলো দরকারী কাজ করে থাকে। এর মধ্যে একটি হলো শরীরে অবস্থিত দূর্বল এবং অনিয়ন্ত্রিত কোষগুলোকে নিয়ন্তণে নিয়ে আসে এবং প্রয়োজনে দূর্বল কোষগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে। যদি শরীরের কোনো অংশের কোষ অনিযন্ত্রিত ভাবে বিভাজন করে থাকে, তাহলে সেখানে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯% সিউর। সুতরাং দৈনিক বাদাম খাওয়ার মাধ্যমে উক্ত উপকারিতাগুলো আমরা পেতে পারি।
বাদাম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
বাদামে আছে ম্যাগনেসিয়াম। আমরা জানি যখন আমাদের শরীরের রক্তে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়, তখন আমাদের ডায়াবেটিস বলে অ্যাখ্যায়িত করা হয়। ম্যাগনেসিয়াম হলো এমন উপাদান যা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে আনে। সুতরাং বাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে এনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
মেজাজ ভালো রাখে
বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যে ব্যক্তি প্রতিনিয়ত বাদাম আহার করে, তুলনামূলকভাবে তার মেজাজ অন্য ব্যক্তিদের চেয়ে বহুগুণে ভালো থাকে। তাদের আচার-আচরণ অনেক নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে তখন।
বাদাম শরীরের মেদ কমায়
যদিও শুনতে কিছুটা অস্বস্তিকর মনে হলেও, বাস্তবটা সত্যিই। বাদামে থাকা ভিটামিন-সি এবং অন্য বিশেষ কিছু উপাদান আমাদের শরীরের মদে কমাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। এছাড়াও যেহেতু দেহে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে ফেলে, সেহেতু শরীরে মেদ জমতে পারে না বরং পূর্বের জমাকৃত চর্বি বা মেদ ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যায়।
কোমরের ব্যথা কমায় বাদাম
যেসব লোক দীর্ঘদিন যাবত কোমরের ব্যথায় কাতর, তারা বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ার মাধ্যমে কিছুটা হলেও রেহাই পেতে পারে। বাদামে থাকা উপাদানগুলো কোমরের ব্যাথা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
বাদাম শরীরের ক্লান্তি দূর করে
বাদাম হলো শক্তির অন্যতম একটি ভালো উৎস। বাদাম খাওয়ার মাধ্যমে যে কেউ ভালো পরিমাণ এনার্জি গ্রাহণ করতে পারে। শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তি থাকলে এমনিতেই ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।
এতোক্ষণ জানলাম বাদামের উপকারিতা গুলো। বাদাম খাওার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি অনেকভাবে উপকৃত হতে পারে। মূলকথা সুস্বাস্থ্য থাকতে এবং সুঠম দেহ ধরে রাখতে বাদামের গুরুত্ব অপরিসীম।
এবার চলুন জানা যাক বাদামের অপকারিতাগুলো। এতোক্ষণ জানলাম বাদামের উপকারিতাগুলো। আমরা জানি সব কিছুরই সামান্য পরিমাণ হলেও সাইড এফেক্ট থাকে। তেমনি বাদামেরও কিছু আছে। চলূন এগুলো জানা যাক।
বাদামের অপকারিতা
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
- এলার্জি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- কিছুটা ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
- রোগ নির্মূল হতে বিলম্ব হয়।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়তে পারে
অতিরিক্ত বাদাম খেলে গ্যাস্ট্রিক বাড়ার সম্ভাবণা অনেকগুণে বেড়ে যায়। বাদামে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড ও অন্য উপাদানগুলো আমাদের শরীরে গ্যাস্ট্রিক বাড়াতে সাহায়তা করে। তাই অতিরিক্ত বাদাম খাওয়া হতে বিরত থাকতে হবে।
এলার্জি জনিত সমস্যা দেখা দেয়
এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দায়ী চীনা বাদাম। চীনা বাদামে থাকা বিশেষ কিছু খনিজ উপাদান এলার্জি জনিত সমস্যাকে উস্কে দেয়। অতিরিক্ত বাদাম খাওয়ার বদভ্যাস অবশ্যই ছেড়ে দিতে হবে। কেননা বেশি পরিমাণ বাদাম খাওয়াতে এলার্জি ঘঠিত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রচুর।
বাদাম ওজন বা পেট/মেদ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
বাদামে থাকে উচ্চমাত্রায় ফ্যাট এবং প্রোটিং। যখন কেউ অতিরিক্ত মাত্রায় ফ্যাট কিংবা প্রোটিং জাতীয় খাবার গ্রহণ করে তখন তার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্বাবনা বেড়ে যায়। যেমন, বাংলাদেশের প্রচলিত একটি বাদাম হলো কাঠ বাদাম। এই বাদামটি ওজন কমাতে যেমনি সাহায্য করে তেমনি অতিরিক্ত ব্যবহার করার ফলে ওজন বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। তাই অবশ্যই বাদাম খাওয়াতে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে।
রোগ নির্মূল হতে বিলম্ব হয়/সময় লাগে
সাধারণ ম্যাগনেসিয়াম আমাদের দেহে ঔষুধের কার্যক্ষমতা অনেকটা কমিয়ে দেয়। ফলাফলসরুপ হলো আমরা যখন ঔষধ খাই তখন ঔষধ পূর্বের মতো দ্রুত নিরাময় পায় না। কিছুটা সময় লাগে। সুতরাং বাদাম খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের আরো সতর্কতা অবলম্বণ করতে হবে।
সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, বাদামের উপকারিতা অনেক তেমনি কিছু ক্ষেত্রে বাদামের অপকারিতাও অনেক রয়েছে। বাদামের যেমন উপকার রয়েছে তেমনি কিছুটাও হলেও এর অপকারিতাও রয়েছে।
তবে অবশ্যই সু স্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত বাদাম খাওয়ার বিকল্প খুব কম কিছুই আছে।
সুতরাং প্রতিদিন বাদাম খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন এবং সুস্বাস্থ্য থাকুন। অবশ্যই পরিমিত বাদাম খান এবং বাদামের উপকারিতা গুলো দ্ধারা উপকৃত হোন।